Coronavirus Therapy: ব্যারিসিটিনিব, সোট্রোভিমাব; হু অনুমোদিত নতুন কোভিড থেরাপি সম্পর্কে জানুন!
- Published by:Sanjukta Sarkar
Last Updated:
Coronavirus Therapy: কোভিডের চিকিৎসায় ব্যারিসিটিনিব (Baricitinib) ও সোট্রোভিমাব (Sotrovimab) নামের দুটি ওষুধের নাম সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
#নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস সংক্রমণের (Coronavirus) চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত বিশ্বজুড়ে। মারণ এই ভাইরাসের সঠিক ওষুধ (Medicine) আবিষ্কার হয়নি এখনও। বিভিন্ন রোগের ওষুধ ব্যবহার করে দেখা হচ্ছে কোনটা ঠিক কতটা কার্যকরী। সম্প্রতি, কোভিডের চিকিৎসায় ব্যারিসিটিনিব (Baricitinib) ও সোট্রোভিমাব (Sotrovimab) নামের দুটি ওষুধের নাম সুপারিশ (Coronavirus Therapy) করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। বয়স্ক এবং কোমর্বিডিটিযুক্ত (Comorbidity) ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই দু’টি পদ্ধতি ব্যবহারে প্রাণের ঝুঁকি কমাবে বলে জানিয়েছেন হু-র বিশেষজ্ঞেরা। এখানে উল্লেখ করতে হবে যে গত ২ বছরে কোভিডের চিকিৎসায় হাইড্রক্সক্লোরোকুইন (Hydroxychloroquine), প্লাজমা থেরাপি (Plasma Therapy), রেমডিসিভির (Remdesivir) ব্যবহারের সুপারিশ করেছিল হু। পরে সেই সুপারিশ বাতিলও করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতে কোভিডের (Covid-19) চিকিৎসা নিয়ে আরও পরীক্ষা হবে, তখন আরও নতুন পদ্ধতি উঠে আসবে। যার কার্যকারিতা হবে অনেক বেশি ও স্থায়ী।
ব্যারিসিটিনিব কী?
advertisement
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যারিসিটিনিব ওষুধটি ব্যবহার করা যাবে। ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এটি জানুস কিনেস (Janus kinase) ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ। যা মুখ দিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে নেওয়া যায়। তারা বলছেন, ব্যারিসিটিনিব মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ওষুধ সেবনে গুরুতর কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি (Hospitalization), ভেন্টিলেশনের ঝুঁকি ও মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
advertisement
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিডের চিকিৎসার জন্য আইএল ৬ (IL-6) বা ইন্টারলিউকিন ৬ (Interleukin 6) ইনহিবিটর বলে একটি ওষুধ অনুমোদন করে। এটিও আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ইনহিবিটর সাইটোকাইন স্টর্ম (Cytokine Storm) নামে পরিচিত ইমিউন সিস্টেমের (Immune System) অত্যধিক প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সহায়তা করে। যা গুরুতরভাবে অসুস্থ কোভিড রোগীদের মারাত্মক পরিণতি ঘটাতে পারে।
advertisement
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ (GDG) বলেছে যে কর্টিকোস্টেরয়েডের সংমিশ্রণে ইন্টারলিউকিন-৬ (IL-6) রিসেপ্টর ব্লকারের বিকল্প হিসাবে ব্যারিসিটিনিব ব্যবহারের জন্য তারা জোরালো সুপারিশ করছে গুরুতর কোভিড রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে। কর্টিকোস্টেরয়েড সস্তা এবং ব্যাপকভাবে উপলব্ধ ওষুধ। এটি সাধারণত কোভিডের গুরুতর ক্ষেত্রে ইমিউন সিস্টেমের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে সৃষ্ট প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকর। এর আগে দু'টি আইএল-৬ (IL-6) ইনহিবিটর আর্থ্রাইটিসের ওষুধ টোসিলিজুমাব এবং সারিলুম্যাব কোভিডের চিকিৎসার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ করেছিল।
advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ডব্লিউএইচও (WHO) প্রমাণ পেয়েছে যে ব্যারিসিটিনব মৃত্য়ুহার কমিয়েছে এবং ভেন্টিলেশনের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করেছে। যেহেতু ব্যারিসিটিনিব এবং আইএল-৬ রিসেপ্টর ব্লকারগুলির একই রকম প্রভাব রয়েছে, তখন এর মধ্যে শুধুমাত্র একটিকে বেছে নিতে হবে (Coronavirus Therapy)। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে একই সময়ে উভয় ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
advertisement
বারিসিটিনিব কি ভারতে পাওয়া যায়?
এই ওষুধের জেনেরিক সংস্করণগুলি ভারত ও বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে (Coronavirus Therapy)। ওষুধটি মার্কিন ফার্মা জয়ান্ট এলি লিলির (Eli Lilly) তৈরি হলেও বাংলাদেশ ও ভারতে কম দামেই পাওয়া যায়। তবে, বিশ্বের অনেক দেশেই জেনেরিক ব্যারিসিটিনিব পাওয়া যাবে না। যেহেতু ওষুধটির পেটেন্ট একটি মাত্র সংস্থার কাছে রয়েছে, তাও আবার ২০২৯ সাল পর্যন্ত। পরবর্তীকালে এই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।
advertisement
বারিসিটিনিব-র প্রস্তাবিত ডোজ: কোভিড (Covid Positive) রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই ওষুধ ১৪ দিন প্রতিদিন ৪ মিলি গ্রাম করে দিতে হবে। ভারতে এই ওষুধের সম্পূর্ণ কোর্সের আনুমানিক দাম ৪০০ টাকা। যদিও এলি লিলির তৈরি এই ওষুধের দাম অন্য দেশে আনুমানিক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গত বছরের মে মাসে, এলি লিলি বলেছিল যে ভারতে কোভিড রোগীদের সাহায্য করার জন্য তারা ভারত সরকারকে ব্যারিসিটিনিব অনুদানের প্রস্তাব দিচ্ছে। একই সঙ্গে ভারতে উৎপাদন বাড়াতে রয়্যালটি-মুক্ত স্বেচ্ছাসেবী লাইসেন্সিং চুক্তি করতে ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানিগুলির সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। তারা এও বলেছিল যে রেমডেসিভির-র সংমিশ্রণে ব্যারিসিটিনিবে-র সীমিত জরুরি ব্যবহারের জন্য তারা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (Central Drugs Standard Control Organisation)-র থেকে অনুমতি পেয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছিল যে রেমডেসিভির শুধুমাত্র মৃদু ও গুরুতর কোভিড সংক্রমিত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। কারণ এটি সীমিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের অধীনে অনুমোদিত একটি সংরক্ষিত ওষুধ।
advertisement
সোট্রোভিমাব কী?
সোট্রোভিমাব (Sotrovimab) হল ক্যাসিরিভিমাব-ইমদেভিমাব (Casirivimab-Imdevimab)-র একটি বিকল্প, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত একটি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল (Monoclonal Antibody Cocktail)। ওষুধটি বীর বায়োটেকনোলজির (Vir Biotechnology) সহযোগিতায় ব্রিটিশ ফার্মা জায়ান্ট জিএসকে (GSK) তৈরি করেছে। ইউরোপের দেশগুলিতে ব্যবহারের জন্য এটি জরুরি ছাড়পত্রও পেয়েছে। তবে কোভিডের নতুন প্রজাতি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিগুলির কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা চলছে। প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সোট্রোভিমাব তার কার্যকারিতা ধরে রেখেছে। যেসব করোনা রোগীর অবস্থা গুরুতর নয়, কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ওষুধটি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ডায়াবেটিস বা ইমিউনোডেফিসিয়েন্সির মতো রোগী দীর্ঘ দিন ভোগা করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছে হু। এর প্রস্তুতকারক গ্লাক্সো স্মিথ ক্লাইন।
ডব্লিউএইচও বলেছে যে গুরুতর নয় এমন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে, যাদের হাসপাতালে ভর্তির সর্বোচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। আর যাদের হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা নেই তাদের সোট্রোভিমাব ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। কারণ, গবেষণায় কম ঝুঁকির মধ্যে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ কম কার্যকারিতা দেখিয়েছে। এছাড়াও ব্রিটেনে মৃদু থেকে মাঝারি-সহ ১২ বছরের বেশি বয়সি গুরুতর রোগীদের জন্য অনুমোদিত সোট্রোভিমাব।
সোট্রোভিমাব কি ভারতে পাওয়া যায়?
২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে সোট্রোভিমাব কখন ভারতে পাওয়া যাবে তা স্পষ্ট নয়। কারণ এর নির্মাতারা এখনও দেশের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকদের কাছে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য আবেদন করেনি। এর আগে মার্কের তৈরি করোনার ওষুধ মলনুপিরাভির গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতে জরুরি পরিস্থিতিতে সীমাবদ্ধ ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু কোভিড বিষয়ক ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স (National Task Force) এই ওষুধকে ক্লিনিকাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকলে অন্তর্ভুক্ত করেনি। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে যে এই ওরাল চিকিৎসা কোভিডের ক্ষেত্রে খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না। তবে, নয়া নির্দেশিকায় গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রে রেমডেসিভির ব্যবহারে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে রেমডেসিভির প্রয়োগ করা যেতে পারে জানাচ্ছে ওই নির্দেশিকা।
view commentsLocation :
First Published :
January 31, 2022 5:19 PM IST