হোম /খবর /কোচবিহার /
৫০০ বছরের ইতিহাস বয়ে চলা শ্মশান কালীর পুজো, কোচবিহারের গল্প চমকপ্রদ

Cooch Behar News: ৫০০ বছরের ও বেশি পুরনো জাঁকজমকহীন কোচবিহার পুরাতন শ্মশান কালী মাতার পুজো

X
পুরাতন [object Object]

৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই পুজোতে বিশেষ কোনো জাঁকজমক দেখতে পাওয়া যায় না।

  • Hyperlocal
  • Last Updated :
  • Share this:

    #কোচবিহার: তোর্সা নদীর মাঝখানে পুজো হতো কালী মায়ের। ১৯৫৩ সালে বন্যায় নদী ভাঙ্গনে হারিয়ে যায় সেই মায়ের মন্দির। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় মা। তারপরেও মায়ের অবশিষ্টাংশ আগলে আজও পুজো হয়ে আসছে কোচবিহার শহরের হাজরাপাড়া এলাকায় পুরাতন শ্মশান কালী মন্দিরে। একসময় তোর্সা নদীর পাশেই ছিল শ্মশান। সেখানেই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন শ্মশান কালী মা। পরবর্তীতে স্থানান্তরিত হয়েছে কোচবিহার শ্মশান। নতুন করে মায়ের পুজো শুরু হয়েছে সেই শ্মশানেও। কিন্তু, ঐতিহ্য রক্ষায় আজও পুরাতন শ্মশান কালীর পুজো করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই পুজোতে বিশেষ কোনও জাঁকজমক দেখতে পাওয়া যায় না। শুধু রয়ে গিয়েছে ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে লক্ষ্মী পুজোর দিন থেকে দীপাবলি কালী পুজো পর্যন্ত বিশেষ পুজো পদ্ধতির মাধ্যমে পুজো করা হয় পুরাতন শ্মশান কালী মাতার।

    আরও পড়ুন: হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট, মুক্তি চেয়েও স্বস্তি পেলেন না মানিক

    এলাকাবাসীর কথায়, 'জাগ্রত দেবী সবসময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণ করে থাকেন। শুধুমাত্র বাৎসরিক পুজোই নয়। নিত্য পুজো করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, "যতটুকু মনে পড়ে, পনেরশো বঙ্গাব্দের প্রথম দিকে এই পুজো শুরু করেছিলেন কোচবিহারের মহারাজা গোপাল কৃষ্ণ নারায়ণ। দয়াল চন্দ্র সাধু প্রথম এই পুজো শুরু করেন। এরপর বন্যার সময় মন্দির ভেঙে যায় একটা সময়। কিছুটা অংশ চলে যায় নদীর বিপরীত দিকে টাপুরহাট এলাকায়। সেখানেও শ্মশানকালীর একটি মন্দির করা হয়েছে। কিছুটা অংশ চলে আসে নদীর এই পারে অর্থাৎ শহরের দিকে, যা বর্তমানে পুরাতন শ্মশান কালী মন্দির হিসেবে পরিচিত।\"

    শ্মশান কালী মন্দিরের গুগল ম্যাপ লিঙ্ক: https://maps.app.goo.gl/riKSiF1qSnSayCEo7

    একটা সময় কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড এই মন্দিরের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দারা আবেগের কারণে মন্দিরের দায়িত্বভার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড-এর হাতে দিতে অস্বীকার করে। বর্তমানে যেখানে পুজো চলছে সেখানে মা কে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন বুধু মুনি। বর্তমান পূজারী গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, "বুধু মুনির মৃত্যুর পর থেকেই তিনি পুজোর দায়িত্বভার সামলে আসছেন। নদী বক্ষে মন্দির থাকার সময় প্রতিমা ছিল মাটির, পরবর্তীতে তা পাথরের প্রতিমাতে রূপান্তরিত করা হয়। বাৎসরিক পুজোর পাশাপাশি ফুল জল দিয়েও নিত্য পুজো করা হয় মায়ের।"কোচবিহার জেলার অন্যতম পুরাতন পুজো হিসেবে এই পুজো মানুষের সামনে উঠে না আসলেও।

    রাজ ঐতিহ্য পরম্পরা বজায় রেখে আজও পুরাতন শ্মশান কালী মন্দিরে পুজো করা হয় শ্মশান কালী মাতার। এখানে বলি প্রথা প্রচলিত নেই। বলি প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। এখন বৈষ্ণব মতে মায়ের আরাধনা হয়। পুজোর এই কয়েকদিন গোটা এলাকাবাসী উপস্থিত থাকে মন্দির চত্বরে। রাজ আমলে চাঁদা তোলার কোন বিষয় ছিল না। কিন্তু, বর্তমানে অর্থের অভাবে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে। পুজোর সময় চাঁদা তুলতে বাধ্য হয় এলাকাবাসী। বর্তমানে এভাবেই হয়ে আসছে পুজো। এলাকার মানুষদের বিশ্বাস পুরাতন শ্মশান কালী রক্ষা করে যাবে গোটা কোচবিহারের মানব কূলকে।

    Sarthak Pandit

    First published:

    Tags: North Bengal