CoochBehar News: পেয়েছেন স্বর্ণপদক! তবুও ভবিষ্যতের পড়াশোনার চিন্তা ভাবাচ্ছে এই মেধাবীকে
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- hyperlocal
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
CoochBehar News: ভবিষ্যতের চিন্তায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন এই মেধাবী পড়ুয়া। ভবিষ্যত দিনে উচ্চশিক্ষায় আরো শিক্ষিত হওয়ার আশা রয়েছে এই মেধাবী পড়ুয়ার। তবে সরকারি সাহায্য যদি এসে না পৌঁছায়।
সার্থক পণ্ডিত, কোচবিহার: কোচবিহার সদর শহর সংলগ্ন খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষবাথানের ডুমুরতলা এলাকায় এক মেধাবী পড়ুয়া সুব্রত দাস। ছোট থেকেই আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছে সে। টিনের ভাঙা ঘর। তার ফাঁক দিয়ে হু-হু করে ঢোকে ঠান্ডা হাওয়া। নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করা কিছু ব্যানার টিনের দেওয়ালে আটকে সেই ঠান্ডা হাওয়া আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা। বৃষ্টিতে ভাঙা টিন দিয়ে জল পড়ে বই নষ্ট হয়ে যায় মাঝে মধ্যেই। তাই বই বাঁচাতে ঘরের ভিতরে রাখা টিনের ট্রাঙ্ক। বর্ষায় সেই ট্রাঙ্কের ভেতরেই বইখাতা রাখতে হয়।
তাঁর সেই ভাঙা ঘরে এখন শোভা বাড়াচ্ছে চকচকে একটি সোনার মেডেল। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র সুব্রত সংশ্লিষ্ট বিভাগে সোনার মেডেল পেয়েছে। সুব্রত জানান, অর্থাভাবে আজ পর্যন্ত একজনও গৃহশিক্ষক রাখতে পারেনি সে। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই ছিলেন একমাত্র ভরসা। নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে সেখানে পড়াশোনা করেই সাফল্য মিলেছে। বাড়িতে বাবা, মা, দাদা রয়েছে সুব্রতর।
advertisement
বাবা ব্রজেন্দ্র দাস রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। কয়েক মাস আগে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর কাজ করার ক্ষমতা হারিয়েছেন। দাদা দেবব্রত দাস টিউশন পড়িয়ে ও একটি ফটোকপির দোকান করে সংসার চালান। বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর দশা। কয়েক বছর হল বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ এসেছে। আর্থিক অনটনের পাশাপাশি সুব্রতর আরও একটি প্রতিবন্ধকতা হল তার শারীরিক অসুস্থতা। লিভারজনিত রোগ রয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা চলে। প্রায় সারাবছরই ওষুধ খেতে হয়। অসুস্থতার জন্য পড়াশোনাতেও ব্যাঘাত ঘটে। তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে সেরার স্থান দখল করে নিয়েছে সুব্রত।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : অমানবিক দৃশ্য কাঁচরাপাড়ায়, খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুই আশ্রয়হীন অসুস্থ ঘোড়া
সে আরোও জানায়, পড়াশোনার জন্য তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হয়। বর্ষায় টিনের চাল দিয়ে ঘরে জল পড়ে। অনেক বই নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য ট্রাংকের ভিতরে বই ঢুকিয়ে রাখতে হয়। অসুস্থ থাকার জন্য রাতের পর রাত ঘুমোতে পারে না সে। এভাবেই পড়াশোনা চলছে। তাঁর ইচ্ছে রয়েছে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা করার।
advertisement
আরও পড়ুন : আর মশাগ্রামে রেলবদল নয়, এ বার এক ট্রেনে বাঁকুড়া থেকে হাওড়া
আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলা ভাষাকে বেশি করে তুলে ধরার কাজ করতে চায় সুব্রত। সুব্রতর বাবা ব্রজেন্দ্রবাবু বলেন, "ছেলে চাইছে বাংলা ভাষা নিয়ে পিএইচডি করতে। কিন্তু এই পড়াশোনা করতে অনেক খরচ। কীভাবে তা জোগার করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।" তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন এই মেধাবী পড়ুয়া। ভবিষ্যত দিনে উচ্চশিক্ষায় আরও শিক্ষিত হওয়ার আশা রয়েছে এই মেধাবী পড়ুয়ার।
advertisement
তবে তাঁদের আক্ষেপ সরকারি সাহায্য যদি এসে না পৌঁছয়, তবে ভবিষ্যতের পড়াশোনা চালানো নিয়ে অনেকটাই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। সংসার চালিয়ে পড়াশোনা চালানো অনেকটাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে এই মেধাবী পড়ুয়ার। বর্তমানে তাই এই মেধাবী পড়ুয়া সরকারের কাছে কাতর আর্জি জানাচ্ছেন সরকারি সাহায্যের জন্য। চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিকূলতা ও অসুস্থতা নিয়ে লড়াই করার পরেও তার এই সাফল্য নাম উজ্জ্বল করছে কোচবিহারের। বর্তমানে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে সোনার মেডেল পেয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করল সুব্রত।
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 10, 2023 7:46 PM IST
