#কলকাতা: আর কয়েকটা দিন। তারপরই ২০২২-এ ইতি। শুরু হবে নতুন বছর। উদযাপনে মেতে উঠবে গোটা বিশ্ব। নতুন বছরের জন্য নতুন আর্থিক পরিকল্পনাও ছকে ফেলতে হবে। যাতে লক্ষ্য অর্জনে বিঘ্ন না ঘটে। ভিত্তি আরও মজবুত হয়। খেয়াল রাখতে হবে আর্থিক অভ্যাস অর্থাৎ সঞ্চয় এবং বিনিয়োগে যেন ছেদ না পড়ে। তেমনটা ঘটলে দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব পড়াই স্বাভাবিক। ভাল আর্থিক ব্যবস্থাপনা টাকা এবং সময় বাঁচায়। চাপ কমায়। এটাই ঠিক করে দেবে, কোথায় ব্যয় খরচ করা উচিত আর কোথায় নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এবং কার্যকরভাবে সম্পদ বরাদ্দ করতেও সাহায্য করে।
বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কালো ছায়া ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। বাড়ছে ভূ রাজনৈতিক অস্থিরতা। সুদের হার ক্রমশ বাড়ছে। বাজারও আগের তুলনায় অস্থির। তার আঁচ এসে পড়ছে গৃহস্থের জীবনেও। মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যা প্রতিনিয়ত বিপাকে ফেলছে। এই অবস্থায় সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা না থাকলে বিপদ। বিশ্ব ব্যাঙ্কের একাধিক সূচক ২০২৩ সালে বিশ্বব্যপী মন্দার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে মন্দার প্রভাব পড়বে না। কিন্তু আঁচ এসে লাগবেই। তাই আগাম সাবধান হতে হবে।
ডায়রেক্ট প্ল্যান – কমিশনের উপর সংরক্ষণ: বিনিয়োগকারীদের জন্য এটা সবচেয়ে লাভজনক। এতে ভারতে ৩৯টি মিউচুয়াল ফান্ডে নির্বিঘ্নে বিনিয়োগ এবং লেনদেনের সুবিধা দেয়। নিয়মিত প্ল্যানে বিনিয়োগ করার জন্য এজেন্টকে যে কমিশন দিতে হয় তার একটা বড় অংশ সঞ্চয় করা যাবে। অনেকেই হয়ত জানেন না, নিয়মিত পরিকল্পনায় বিনিয়োগ করে যে উপার্জন করা যায়, তার তুলনায় এই তহবিল মূল্য বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘ মেয়াদে আয় বাড়ায়। এই প্ল্যাটফর্মে দালাল বা ব্রোকারদের তুলনায় বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতা বেশি। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে যে কোনও বিনিয়োগকারী ৯০ শতাংশের বেশি ডিসকাউন্ট পেতে পারেন।
আরও পড়ুন: কন্যা সন্তানদের জন্য এই ১০ বিনিয়োগ পরিকল্পনা রাখুন, যা দেবে আজীবনের সুরক্ষাসম্পদ এবং দায় পর্যালোচনা: কোনও আর্থিক পরিকল্পনা করার আগে বর্তমান আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। এই মুহূর্তের আর্থিক পরিস্থিতি বোঝা এবং নতুন বছরের জন্য কার্যকর আর্থিক কৌশল তৈরির আগে সম্পদ এবং দায় মূল্যায়ন করা উচিত। এটা বাস্তবসম্মত এবং উপযুক্ত আর্থিক লক্ষ্যগুলো বুঝতে এবং সেই মতো পদক্ষেপ করতে সাহায্য করে। এ জন্য প্রথমেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং অবসর বা বিনিয়োগ পোর্টফোলিও থেকে বিবৃতি নিতে হবে। মূল্যবান জিনিস যেমন গাড়ি, বাড়ি, গয়নার তালিকা করতে হবে। এর সঙ্গে করতে হবে লোন, ইএমআই-এর তালিকাও। ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, আবাসন ঋণ বা বকেয়া ক্রেডিট কার্ড। এটা বিনিয়োগকারীকে তাঁর আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেবে।
স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ: পরিকল্পনা ছকে ফেললে আর্থিক লক্ষ্যে ফোকাস করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, করোনা মহামারী বা মন্দার মতো পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে। তাই আর্থিক লক্ষ্য বদলে ফেলার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। প্রত্যেকের আর্থিক লক্ষ্য ভিন্ন। কেউ সম্পদ সঞ্চয় করতে চান, কারও লক্ষ্য ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা বা স্বপ্নের বাড়ি কেনা। লক্ষ্য যাই হোক না কেন, প্রতিটির জন্য আলাদা কৌশল প্রয়োজন। তাই একটা মাইন্ড ম্যাপ বা ফ্লো চার্ট তৈরি করা যায়। যাতে ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীর আর্থিক অগ্রগতি ফুটে উঠবে। তাহলে পরের বছরের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা সহজ হয়ে যাবে।
বাজেট অনুযায়ী চলা, খরচে লাগাম: বাজেট অপরিহার্য। বাজার, ভাড়া, বিল মেটানো, যাই হোক না কেন, প্রতি মাসে কোথায় কত খরচ হচ্ছে, তার হিসেব রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, দৈনন্দিন খরচে লাগাম টানতে পারলেই সঞ্চয় বাড়বে। এটা একটা টুল যা আর্থিক লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। প্রথমে বাজেট বেঁধে নিতে হবে। সেই অনুযায়ী খরচ। কোথায় খরচ কমানো যায় তারও একটা তালিকা করতে হবে। সস্তা ইন্টারনেট প্ল্যান খোঁজা, স্ট্রিমিং সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা কমানোর কথা ভেবে দেখা যেতে পারে। বাজেট করার সময় কোন খরচগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে সেটা জানাও গুরুত্বপূর্ণ।
জরুরি তহবিল: হঠাৎ প্রয়োজনে বা বিপদেআপদে খরচের জন্য একটা জরুরি তহবিল তৈরি করা আবশ্যক। এই ফান্ডে ঋণের ইএমআই সহ ১২ থেকে ১৪ মাসের খরচ চালানোর মতো টাকা রাখতে হবে। এর জন্য মাসিক বেতন থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আগেই সরিয়ে রাখা যায়। এটা অনেকের কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে, কিন্তু বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।