কলকাতা: বর্তমানে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ড বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ঝুঁকি থাকলেও ভাল রিটার্নের আশায় বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ডকেই বেছে নিচ্ছেন। আর আমাদের পারিপার্শ্বিক বাজারে এখন নানা ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডের বিকল্প এসে গিয়েছে। কিন্তু ৫ বছরের বিনিয়োগের জন্য কোন কোন মিউচুয়াল ফান্ড বেছে নেওয়া আবশ্যক। এই বিষয়ে প্রাইমইনভেস্টরের সহ-প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকান্ত মীনাক্ষি কী বলছেন, সেটাই শুনে নেওয়া যাক।
ধরা যাক, বর্তমানে আমেরিকার বাসিন্দা এক ৩৬ বছর বয়সী যুবক গত চার বছর ধরে মাসিক এসআইপি-র মাধ্যমে মোট সাতটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন। আর এই ৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে রয়েছে এসবিআই ব্লু চিপ ফান্ড, এসবিআই ফোকাসড ইক্যুইটি ফান্ড, অ্যাক্সিস মাল্টিক্যাপ ফান্ড, মিরে অ্যাসেট ইমার্জিং ব্লুচিপ ফান্ড। ধরে নেওয়া যাক, এই চারটি মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিটিতে ওই ব্যক্তি মাসিক ৭৫০০ টাকা করে বিনিয়োগ করেন। এ-ছাড়াও এবিএসএল এমএনসি ফান্ড, ডিএসপি স্মল ক্যাপ ফান্ড এবং ফ্র্যাঙ্কলিন ইন্ডিয়া ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ডের মতো মিউচুয়াল ফান্ডে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে বিনিয়োগ করছেন তিনি। আরও পাঁচ বছরের জন্য এখানে এই ভাবে বিনিয়োগ করে যেতে পারবেন ওই যুবক। আর তাঁর মূল লক্ষ্য হল সম্পদ আরও বাড়ানো। এ-বার প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কি বিনিয়োগের সঠিক পথ বেছে নিয়েছেন।
শ্রীকান্ত মীনাক্ষির পরামর্শ, এসবিআই ব্লুচিপ ছাড়া বাকি যে-সব ফান্ড রয়েছে, সেগুলির একটা আগ্রাসী দিক রয়েছে। যার ফলে এটা অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পোর্টফোলিও হিসেবে গণ্য হবে। এমনকী উচ্চ ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের ফান্ডের উচ্চ এক্সপোজার কমানো যেতে পারে। তা-ছাড়াও কয়েকটি ফান্ডের পারফরমেন্স তেমন ভাল নয়। ফলে সে-ক্ষেত্রে এসআইপি-গুলিকে উল্লিখিত ভাবে পুনর্গঠন করা যেতে পারে। ধরা যাক, এসবিআই ব্লুচিপ এবং মিরে অ্যাসেট ইমার্জিং ব্লুচিপের ক্ষেত্রে আগের মতোই এসআইপি চালিয়ে যেতে হবে। এ-বার এসবিআই নিফটি ইনডেক্স ফান্ডে ১২ হাজার টাকার একটা নতুন এসআইপি শুরু করা যেতে পারে। কারণ এইটা করলে সমগ্র পোর্টফোলিওর ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যাবে। আসলে লার্জ-ক্যাপ স্পেসে প্যাসিভ ফান্ড বেছে নেওয়ার বিষয়টা বাড়ছে এবং বর্তমানে তা দুর্দান্ত বিকল্পও বটে।
আরও পড়ুন: দেখে নিন কত রকমের সেভিংস প্ল্যান হয়, কোথায় বিনিয়োগ করলে সবচেয়ে বেশি লাভ!সমগ্র ঝুঁকি কমানোর জন্য এ-বার এসবিআই ফোকাসড ইক্যুইটি এবং অ্যাক্সিস মাল্টিক্যাপ-এর প্রতিটিতে ৫ হাজার টাকা করে এসআইপি করতে হবে। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, অ্যাক্সিস মাল্টিক্যাপ হল একেবারে নতুন ফান্ড। ফলে এর তেমন কোনও ট্র্যাক রেকর্ডও নেই। এমনকী নেই এর সীমিত রিটার্নের ইতিহাসও। ফলে এর সুস্পষ্ট ছবি কিন্তু আমাদের হাতে নেই। তাই এই ফান্ডের পারফরমেন্সের উপর নিয়মিত নজর রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো নিজের পদক্ষেপ শুধরে নিতে হবে। নিপ্পন ইন্ডিয়া স্মল ক্যাপ-এ ৮ হাজার টাকার একটি নতুন এসআইপি শুরু করতে হবে। ডিএসপি স্মল ক্যাপ কিন্তু ভাল ক্যাটেগরির পারফর্মার নয় এবং এখানে সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
শ্রীকান্ত মীনাক্ষির কথায়, ওই যুবকের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের এই পোর্টফোলিও পুনর্গঠনের অর্থ হল, এবিএসএল এমএনসি-তে এসআইপি বন্ধ করে দেওয়া। কারণ এটি সব থেকে খারাপ পারফর্ম করেছে। এ-ছাড়া মাথায় রাখতে হবে যে, এই পোর্টফোলিওটা কিন্তু মারাত্মক আগ্রাসী প্রকৃতির এবং এর জন্য প্রচুর পরিমাণে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার প্রয়োজন। যদি বিনিয়োগকারী ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে চান, তা-হলে তাঁকে মাল্টিক্যাপ ফান্ডের জায়গায় একটি হাইব্রিড অ্যাগ্রেসিভ ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হবে। এর পাশাপাশি বছরে এক বার করে পোর্টফোলিওটা পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। বিশেষ করে কোন ফান্ড ভাল পারফর্ম করছে, আর কোনটা করছে না, সেই দিকটাও খুঁটিয়ে দেখে নিতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।