বীরভূম: ইতিহাস রক্ষণাবেক্ষণে চরম গাফিলতি। বছরের পর বছর বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সিউড়ির ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের ঐতিহ্যবাহী শতাব্দী প্রাচীন বড় ঘড়িটি। আর শোনা যায় না তার ঘুম ভাঙানি শব্দ। মেরামতের অভাবেই তার এই অবস্থা। ভেঙে গিয়েছে ঘড়িটির বহু অংশ। সিউড়ির মানুষ কিন্তু চাইছে এই ঐতিহ্যবাহী ঘড়িটি সংস্কার করে ফের আগের মত চালু করা হোক।
ঐতিহ্যবাহী সিউড়ি শহরের একাধিক ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের উপরে থাকা এই বিশালাকার ঘড়িটি। কিন্তু প্রায় ৭ বছর ধরে সেটি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এই প্রসঙ্গে সিউড়ির প্রবীণ নাগরিক সুকুমার সিংহ বলেন, “উনিশ শতকের প্রথম দিকে তৎকালীন হেতমপুরের রাজকুমার মহিমারঞ্জন চক্রবর্তী সেই সময়ের জেলা কালেক্টরকে উপহার দিয়েছিলেন এই ঘড়িটি। লন্ডন থেকে আনানো হয়েছিল এই ঘড়িটিকে। ১৯০২ থেকে ১৯০৪ সালের মধ্যে ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের উপর এই ঘড়িটি স্থাপন করে তৎকালীন জেলা প্রশাসন। দশকের পর দশক, ভোর থেকে রাত্রি, এই ঘড়ির শব্দেই সময় বুঝতেন সিউড়ির মানুষ। এর ঢং ঢং শব্দ শুনে নিজেদের মত কাজে বের হতেন। এমনকি নিজেদের ঘড়ির টাইমও ঠিক করত এই ঘড়ি দেখেই।”
আরও পড়ুন: একজনও শিক্ষক নেই! বন্ধ হওয়ার মুখে জুনিয়র হাইস্কুল
এর আগে বজ্রপাতে ১৯৭০ সালে খারাপ হয়েছিল এই ঐতিহ্যবাহী ঘড়িটি। পরে ১৯৯৫ সালে সিউড়ি শহরের একজন মেকানিক ঠিক করে সেটি পুনরায় চালু করেন। তারপর থেকে ওই মেকানিকই ঘড়িটি দেখভাল করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে ঘড়িটি পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এই ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি নিয়ে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আবেগ আছে। শহরের নতুন প্রজন্মের মুখ অন্বেষা চক্রবর্তী বলেন, “আমি দাদু-ঠাকুমার মুখ থেকে শুনেছি এই ঘড়িটির কথা। তাঁরা এই ঘড়ির আওয়াজে ঘুম থেকে উঠতেন। কিন্তু আমরা আধুনিক যুগে থেকেও সেই স্বাদ একবার হলেও ফিরে পেতে চাই। তাই আমরা চাইছি ঘড়িটি মেরামত করা হোক।”
সৌতিক চক্রবর্তী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Suri