#বাঁকুড়া : রামকিঙ্কর বেইজ এবং রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের বসত বাটি হেরিটেজ কমিশন দীর্ঘ আবেদনের পর পরিদর্শন করলেও এখনও অবহেলিত অবস্তায় পড়ে রইল বাঁকুড়া জেলার অপর এক কৃতি সন্তান যামিনী রায়ের বসত ভিটে। বাঁকুড়ার কৃতি সন্তান যামিনী রায় ছিলেন একজন বাঙালি চিত্রশিল্পী। তিনি বাংলার বিখ্যাত লোকচিত্র কালীঘাট পটচিত্র শিল্পকে বিশ্বনন্দিত করে তোলেন। তিনি নিজে পটুয়া না হলেও নিজেকে পটুয়া হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করতেন। এই বাঙালি চিত্রশিল্পী যামিনী রায় ১৮৮৭ সালের ১১ এপ্রিল বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামের এক মধ্যবিত্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রামতরণ রায়। মাতার নাম নগেন্দ্রবালা দেবী। ১৯১৮ সাল থেকে তার ছবি ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টের পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। তার শিল্পকলা রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছে।১৯০৬ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতিতে পড়াশোনা করেন।ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতি শিখলেও শেষ পর্যন্ত দেশজ সরল রীতিতে চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯৫৪ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন তিনি। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে বেলিয়াতোড়ের বুকে গড়ে উঠেছে যামিনী রায় কলেজ।
তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে অভিব্যক্তিতে গড়ে উঠেছে যামিনী রায় ভবন। আজও জরাজীর্ণ এবং ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাঁকুড়ার কৃতি সন্তান চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের বসত ভিটে। সংস্কারের অভাবে আজ জরাজীর্ণ অবস্থা। আগাছা এবং জঙ্গলে ঢাকা একতলা বাড়িটির দিকে তাকালে দিনের বেলাতেও যেন গা ছমছম করবে। বাড়ির বিভিন্ন দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং পুরো বাড়ি ঘিরে জন্ম নিয়েছে আগাছা এবং জঞ্জাল। একটু একটু করে ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের এই প্রাচীন বাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন এই বাড়িটিকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হোক এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কার করা হোক শিল্পীর এই বাড়িটিকে। বেলিয়াতোড় এর স্থানীয় বাসিন্দা রুপেশ মুখার্জী বলেন চিত্র শিল্পী যামিনী রায় বিশ্বখ্যাত একজন মানুষ ছিলেন। উনার জন্মস্থান বেলিয়াতোড়ে। আমরা বেলিয়াতোড়বাসি তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
আরও পড়ুনঃ বেআইনি চোলাই মদের বিরুদ্ধে অভিযান জেলা পুলিশেরতবে তার জন্মভিটেটি আজ ভগ্নপ্রায় এবং জরাজীর্ণ। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যদি বাড়িটিকে সংস্কার করা হয় এবং সরকারের পক্ষ থেকে যামিনী রায় এর বাড়িটিকে যদি হেরিটেজ হোম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় তাহলে শিল্পী যথাযোগ্য সম্মান পাবে বলে তিনি মনে করেন। হেরিটেজ হোম ঘোষণা করলে সেখানে গড়ে উঠবে পর্যটনের জায়গা। সেখানে দেশ-বিদেশের মানুষ চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের বসত ভিটে দেখার সুযোগ পাবেন। বাঁকুড়ার ইতিহাস বিশেষজ্ঞ সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের বাড়ি আজ জরাজীর্ণ এবং আগাছা স্তূপে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আলমারি ভেঙ্গে সোনা ও রূপোর গহনা নিয়ে পালাল চোরতিনি বলেন বাঁকুড়ার দুই কৃতি সন্তান রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এবং রামকিঙ্কর বেইজ এর ভিটেবাড়ি হেরিটেজ কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেন । আর কিছুদিন মাত্র সময়ের অপেক্ষা তারপরেই হয়তো হেরিটেজ কমিশনের স্বীকৃতি মিলবে এই দুই কৃতি সন্তানের জন্ম ভিটে। ঠিক তেমনি তিনি হেরিটেজ কমিশনের কাছে আবেদন করেন বাঁকুড়ার আরেক কৃতি সুসন্তান বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এবং বাঁকুড়ার গর্ব যামিনী রায়ের বাড়িও যেন হেরিটেজের স্বীকৃতির আয়ত্তে আনা হয়। হেরিটেজ কমিশনারের কাছে যামিনী রায়ের বসত ভিটে পরিদর্শনের আবেদন জানান তিনি।
Joyjiban Goswamiনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura