কিশলয় মাইতি, বয়স ২৪ বছর। কিশলয় কম্পিউটার নিয়ে বিটেক করেছেন ভুবনেশ্বরে। কিন্তু চাকরিতে কিছুতেই তাঁর মন ভরে না। ইচ্ছে ছিল বই পড়া এবং বই পড়ানো। তার সঙ্গে ব্যবসা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানও। তাই পড়া শেষ করার পর বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লী ডাক বাংলো এলাকায় দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সে শুরু করে চায়ের দোকান।
advertisement
তরুণ তরুণীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা যাতে চা খেতে খেতে তাঁদের প্রিয় লেখকের বই বা প্রিয় বইটুকু চোখ বুলিয়ে নিতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। বাংলা লেখক এর মধ্যে সমরেশ মজুমদার,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর যেমন বই রয়েছে, তেমনি রয়েছে হলিউডের Rick Riordan এর Hero of Olympus, EL James এর Fifth shades of darkar এরই সঙ্গে চেতন ভগতের revolution twenty twenty বইও।
আর চা কফির গরম কাপে চুমুক দিয়ে প্রিয় লেখকের বইয়ে চোখ বোলানোয় মেতেছেন বইপ্রেমীরা। দোকানে ঢুকলেই বই সাজানো রয়েছে। এই বইগুলো তাঁর নিজস্ব সংগ্রহের বলে জানিয়েছেন কিশলয়। এইসঙ্গে রয়েছে বন্ধু-বান্ধবের এবং নিজের পরিবারের দিদির কিছু জমানো বই। আর এই বই তাঁর নিজের প্রাণপ্রিয়। তবে এই বইয়ের সংরক্ষণে খুশি ক্রেতারা।
অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকছেন এই বইয়ের সঙ্গে চা ও কফি খেতে। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা খাবারও রয়েছে এই দোকানে। অনলাইনের উপর সমাজ ব্যবস্থার বাইরে বই পড়া বই পড়ানোর প্রয়াস কিশলয়ের। উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
কিশলয় মাইতি বলেন কোনদিনই চাকরির ইচ্ছে ছিল না। তাই ব্যবসা করার ইচ্ছে থেকেই এমন ধারনা মাথায় আসে। এরই সঙ্গে চাইতাম মানুষকে বই পড়াবো। কারণ বর্তমানে মোবাইলও ডিজিটালের দাপটে নতুন প্রজন্ম বই পড়া গিয়েছে ভুলে। বই পড়ার দিয়ে মানুষের জ্ঞান বাড়ানোর জন্য সঙ্গে বইপ্রেমীদের বইয়ের রচনা তৃপ্তি করার জন্যই এই আয়োজন। নিজেকে খুব ভাল লাগে যখন কেউ চা খেতে খেতে বই পড়ে।
চা কফি খেতে আসা গ্রাহক আত্মদিপ দাস, রীতশ্রী রায়, চন্দ্রানী ঘোষ, ইন্দ্রনীল নাথ, সায়ন্তন কুন্ডুরা বলেন এই চা ও কফি খাওয়ার সঙ্গে বই পড়ার ইচ্ছেটা বহুদিনের। কিন্তু এইভাবে কফি শপ বা রেস্টুরেন্টে এসে এই ধরনের ব্যবস্থা ভাবতে পারিনি।
আরও পড়ুন, বাজল শেষের ঘণ্টা, রমরমিয়ে কাটল বইমেলার ক'টা দিন, কত কোটির বই বিক্রি হল জানেন...
আরও পড়ুন, চলন্ত পাঠাগার! বস্তিবাসী শিশুদের কাছে এখন হাত বাড়ালেই বই, পা বাড়ালেই আলো
তাঁরা আরও জানান, তবে খুব ভাল লেগেছে সঙ্গে সমাজকে যে সচেতন করতে চাইছে ওই ছেলেটা। এটা খুব ভাল বার্তা বলে আমরা মনে করছি। আমরা প্রায় আসি এবং চা খেতে খেতে বই পড়ি।
রঞ্জন চন্দ্র