সামান্য বিষয় নিয়েই বাড়িতে স্ত্রী'র সঙ্গে অশান্তি বেঁধে যেত। কয়েকমাস আগে সেই গাড়ি বিক্রি করে, আরও ছোটো মালবাহী অটো কেনেন। কিন্তু, তাতেও বোধহয় ঋণের বোঝা কমেনি! তবে, শেষ পর্যন্ত তার পরিণতি যে এরকম হবে তা কেউই ভাবতে পারেননি। মঙ্গলবার গভীর রাতে আনুমানিক সাড়ে বারোটা-একটা নাগাদ, স্ত্রী-কে হত্যা করে আত্মঘাতী হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের অন্তর্গত টুকুরিয়াপাট গ্রামের অশোক কোলা। বছর ৪৩-এর অশোক ধারালো কোনও ছুরি দিয়ে স্ত্রী'র গলা কেটে নিজে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: কলকাতায় হঠাৎ ৯টি কোরিয়ান যুদ্ধবিমান! হঠাৎ কী এমন ঘটল, মুহূর্তে ভিড়ে ভিড় এলাকা
স্ত্রী'র নাম কেকা কোলা। বয়স আনুমানিক ৩৮। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ের বিবাহিত, ছোট মেয়ে ও ছেলে পড়াশোনা করছে। ঘটনায় হতবাক সকলেই। একসঙ্গে বাবা-মা'কে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ল তারা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অশোক-কেকা'র ছোট মেয়ে সুমনা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতোই বাবা-মা সহ তারা সকলে খাওয়া-দাওয়া সেরে শুতে যায়। ঠাকুমা এবং তারা ভাই-বোন ছাদে এবং বাবা-মা নীচে শুয়ে পড়ে। রাত্রি সাড়ে বারোটা নাগাদ ঠাকুমার ওষুধ আনার জন্য নিচে নেমে সুমনা দেখে যে বাবা-মা'র দরজার বাইরে তালা লাগানো।
আরও পড়ুন: সোরিয়াসিস নিয়ে চিন্তা শেষ, ওষুধ আবিষ্কার ৭ বাঙালির! ত্বকের জঘন্য সমস্যা থেকে মুক্তি
ডাকাডাকির পরও কেউ সাড়া দেয়নি। তারপরই লোক ডেকে, তালা ভেঙে দরজা খোলা হয়। সুমনা'র কথায়, "দেখি মায়ের গলা কাটা। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বাবা নেই! কিছুক্ষণ পর পাড়ার লোকজন এসে বলে, বাবা গলায় দড়ি দিয়েছে!" সুমনা জানায়, "বাবার মদ্যপান করা নিয়ে মাঝেমধ্যে অশান্তি হতো, তবে মঙ্গলবার কোন অশান্তি হয়নি। বাবাও মদ্যপান করেন নি!" কেকা দেবী'র ভাই প্রশান্ত জানান, "জামাইবাবু সম্ভবত ঋণের বোঝা সহ্য না করতে পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। গত কয়েকমাস ধরে মাঝেমধ্যেই দিদির গায়ে হাত তুলতেন। কয়েকবার রাগ করে দিদি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। আমরা আবার দুজনকেই বুঝিয়ে সব ঠিকঠাক করে দিতাম! কিন্তু, শেষ পর্যন্ত যে এরকম ঘটনা ঘটবে, তা আমরা ভাবতেও পারিনি!" মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আনন্দপুর থানার তরফে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করে তদন্ত-ও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী!
পার্থ মুখোপাধ্যায়





