সাধারণত মৃত্যুর পর গ্রাম বাংলায় আজও খোল কর্তাল নিয়ে শবযাত্রা বেরোয়। তবে বৃদ্ধ গণেশ পাসোয়ানের শেষ যাত্রায় পরিচিত খোল-কর্তালের বদলে বাজল তাশা। আনন্দের সঙ্গে পরিবারের অভিভাবককে বিদায় জানালেন পাসোয়ান পরিবারের বাকিরা। যে ছবি দেখে প্রথমে কিছুটা অবাকই হন পথচলতি মানুষজন। তবে এতে ভুল কিছু দেখছেন না মৃতের ছেলে বা নাতিরা। তাঁদের দাবি, একটা পরিপূর্ণ জীবন কাটিয়ে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেছেন গণেশবাবু। হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার আগে এক সম্পূর্ণ সফল জীবন কাটিয়ে গিয়েছেন। তাই শেষ বিদায় জানানোর সময় দুঃখ নয়, তাঁরা বিষয়টি উদযাপন করতে চেয়েছেন। যাতে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে গণেশ পাসোয়ান ভাল থাকেন!
advertisement
আরও পড়ুন: 'দিদির দূতেরা' সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপগুলোয় সবার আগে পৌঁছবে
মৃত্যুর পরের এই দৃশ্য খুব একটা সহজলভ্য নয়। কারণ এই সময় বিষাদ ছেয়ে যায় পরিজনদের মনে। তবে গণেশ পাসোয়ান প্রথম নন, দেশ-বিদেশে এর আগেও কয়েকটি ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে। খুব অশতীপর কেউ মারা গেলে আজকাল পরিজনরা অনেক সময় তাদের মৃত্যু উদযাপন করছেন। দুর্গাপুরের প্রয়াত বৃদ্ধ গণেশ পাসোয়ানের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হল।
সমাজতত্ত্ববিদরা এই পদক্ষেপে প্রচলিত রীতির বাইরে গিয়ে মনের ইচ্ছায় চলার এক প্রবণতা দেখতে পাচ্ছেন। যার প্রশংসা করেছেন তাঁরা। বলছেন, মৃত্যু মানেই বিষাদ। পরিজন শোকে কাতর হবে এটাই স্বাভাবিক। সেখানে গান-বাজনা আপাত দৃষ্টিতে বেমানান। কিন্তু সত্যিই যদি কোনও মানুষ এক পরিপূর্ণ জীবন কাটিয়ে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এবং সেই বোধ যদি তাঁর পরিজনদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে থাকে, তবে তারা মৃত্যুকে উদযাপন করা যেতেই পারে। শেষ বিদায় সবসময় চোখের জলে, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে হতেই হবে এর কোনও অর্থ নেই বলে দাবি করেছেন সমাজতত্ত্ববিদরা।
নয়ন ঘোষ