প্রশ্ন উঠছে, পড়শী রাজ্য ওড়িশায় কি ধীরে ধীরে কমছে বাংলার আলুর উপর নির্ভরশীলতা? পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট হিমঘরের সংখ্যা ৯০টি। এর মধ্যে ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনাতেই রয়েছে ২৯টি হিমঘর। চন্দ্রকোনা দীর্ঘদিন ধরেই আলু চাষের গড় হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরে জেলার হিমঘরগুলিতে মোট আলু লোড হয়েছে প্রায় তিন কোটি ৩৯ লক্ষ বস্তা, আর আনলোড হয়েছে মাত্র দুই কোটি ৩৯ লক্ষ বস্তা। অর্থাৎ এখনও বিপুল পরিমাণ আলু হিমঘরে পড়ে রয়েছে। চন্দ্রকোনার হিমঘরগুলিতে বর্তমানে প্রায় ১৮ থেকে ২০ শতাংশ আলু মজুত রয়েছে। কোথাও ৪৫ হাজার বস্তা, আবার কোথাও ৯০ হাজার থেকে এক লক্ষ বস্তা পর্যন্ত আলু পড়ে আছে।
advertisement
আরও পড়ুন: নেশামুক্তি কেন্দ্রে বেধড়ক মারধর, ছেলেকে দেখতে গিয়ে শিউড়ে উঠলেন মা-বাবা! তোলপাড় গোটা এলাকায়
চন্দ্রকোনার আলু চাষি গুনধর ঘোষ, উত্তম হাইত, তরুণ পানদের মত বহু কৃষকের আলু এখনও হিমঘরে। তাঁদের বক্তব্য, “বাজারে আলুর দাম নেই। বাছাই গড় আলু এখন ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কুইন্টাল। এই দামে আমাদের খরচ উঠছে না। ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা দাম না পেলে মাথা বাঁচানো কঠিন।” আলু ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, এই সংকটের পিছনে রাজ্য সরকারের ভিন রাজ্যে আলু রফতানির নীতিও দায়ী। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সহ-সভাপতি ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি মুকুল ঘোষ বলেন, “একসময় বর্ডার ঘিরে ভিন রাজ্যে আলু রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখনই ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু নিতে শুরু করে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের আলু গেলেও আগের মত চাহিদা নেই। ওড়িশা বাজার কার্যত দখল করে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ।” এর মধ্যেই নতুন করে আলু লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও চাষ সম্পন্নও হয়েছে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ নতুন আলু তোলা শুরু হবে। সরকার হিমঘরে আলু মজুত রাখার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করলেও, সেই ডেডলাইনের অর্ধেক সময় ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে। তাহলে হিমঘরে পড়ে থাকা এই বিপুল পরিমাণ আলুর ভবিষ্যৎ কী? ওড়িশার বাজারে বাংলার আলুর চাহিদা কি আর ফিরবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বাংলার কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীদের।





