TRENDING:

বাবার ইচ্ছা পূরণে তাঁতির ঘরে দুর্গাপুজো! বাড়ির ছেলে নিজেই এখন মৃৎশিল্পী

Last Updated:

তিন ভাই হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সংসার চালালেও বাবার কথাই মনে পড়ত গৌতমবাবুর, বাবা বলে গিয়েছিলেন, দুর্গা পুজোটা ফের চালু করতে

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
শান্তিপুর, নদিয়া, মৈনাক দেবনাথ: শান্তিপুরের চুনুরি পাড়ার লঙ্কাপুকুর লেনে এ বছর ফের দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়েছে গৌতম ঘোষের বাড়িতে। গৌতম ঘোষেরা তিন ভাই — বিষ্ণু ঘোষ, কৃষ্ণ ঘোষ ও গৌতম ঘোষ। মা এখনও বেঁচে থাকলেও বাবা ২০২৩ সালে প্রয়াত হন। ছোটবেলায়, মাত্র আট-নয় বছর বয়সে প্রথম দুর্গামূর্তি তৈরি করেছিলেন গৌতমবাবু। তাঁর বাবা তাঁতের কাজ করতেন, সেই আয়েই সংসার চলত। ছোট্ট হাতে তৈরি মূর্তি নিয়ে পাঁচ-ছয় বার পুজোও হয়েছিল তাঁদের বাড়িতে। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। পড়াশোনা ছাড়তে হয়, বন্ধ হয়ে যায় মূর্তি বানানোও। বাবার মৃত্যুর পর আর্থিক টানাপোড়েন এতটাই বাড়ে যে ঘরবাড়ি বিক্রি করতে হয় তাঁদের। তিন ভাই হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সংসার চালালেও বাবার কথাই মনে পড়ত গৌতমবাবুর, বাবা বলে গিয়েছিলেন, দুর্গা পুজোটা ফের চালু করতে।
advertisement

বাবার সেই কথাকেই প্রেরণা করে গত বছর থেকেই ফের মূর্তি গড়া শুরু করেন তিনি। কুমোরপাড়ার শিল্পীদের দেখে দেখে শেখা সেই শৈশবের অভিজ্ঞতাই আজ তাঁর বড় ভরসা। আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও একেবারে একার চেষ্টায় তৈরি করেছেন ১১ ফুট উচ্চতার প্রতিমা। দুর্গার পাশাপাশি রয়েছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিক। কয়েক মাস ধরে তাঁতের কাজের ফাঁকে ফাঁকেই গড়ে তুলেছেন এই প্রতিমা। এবছরের মূর্তির উচ্চতা গত বছরের তুলনায় আরও কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

advertisement

বাড়ির পুজো হওয়া সত্ত্বেও খরচের অঙ্ক কম নয়। তাই প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা হাত বাড়িয়েছেন সাহায্যের জন্য। স্থানীয় বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামীও উৎসাহ প্রদান করতে কিছু অর্থ সহযোগিতা করেছেন গত বছরের মতোই । আশেপাশের এলাকায় আর সেভাবে দুর্গাপুজো হয় না, তাই স্থানীয় মানুষজনও উৎসাহের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। পুজোর দিনগুলোতে ভিড় জমছে দর্শনার্থীদের। সকলেই মুগ্ধ গৌতমবাবুর নিষ্ঠা ও শ্রম দেখে।

advertisement

গৌতমবাবুর হাতে তৈরি প্রতিমা কেবল একটি শিল্পকর্ম নয়, এটি তাঁর বাবার প্রতি অমূল্য শ্রদ্ধার্ঘ্য। এই আবেগেই ভরপুর হয়ে উঠেছে চুনুরি পাড়ার লঙ্কাপুকুর লেনের দুর্গোৎসব। গৌতম বাবুর কথা অনুযায়ী এটা প্রতিবেশীদেরই পুজো তারাই জোগাচ্ছেন সমস্ত খরচ, এমনকি পুজোর সকল দায়িত্ব। প্রতিবেশীরা বলছেন এর আগে শারদীয়ার উৎসবে বাচ্চাদের যেতে হত বেশ খানিকটা দূরে ঠাকুরতলায় অষ্টমীর অঞ্জলি হোক কিংবা সিঁদুর খেলা মহিলাদেরকেও তাই। কিন্তু এই দু’বছর এই গলি তো বটেই আশেপাশের বহু পরিবারের উৎসবের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দুর্গাপুজো।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
বাবার ইচ্ছা পূরণে তাঁতির ঘরে দুর্গাপুজো! বাড়ির ছেলে নিজেই এখন মৃৎশিল্পী
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল