ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশটাই নিচু এলাকা। আবার এগরা, ওড়িশা সীমান্ত সহ পাঁশকুড়ার কিছু অংশ বাদ দিয়ে বেশির ভাগটাই এঁটেল মাটি। ফলে এই জেলার বেশিরভাগ চাষ জমির জল ধারণ ক্ষমতা বেশি। ফলে বর্ষাকালে চাষবাসের বিস্তর ক্ষতি হয়। এমনকি এই ক্ষতি গিয়ে পড়ে বর্ষা পেরিয়ে শীতকালে সবজি চাষের ক্ষেত্রেও। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে নিচু জমিতে দীর্ঘ সময় জল জমে থাকায় চাষিদের দুর্ভোগ আরও বাড়ে। অতিরিক্ত এই জলের চাপে ছোট ছোট গাছের নরম শিকড় পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও যথেষ্ট মাত্রায় থাকে। এমন অবস্থায় সঠিকভাবে চারা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে বিশেষ উপায়ের এই মডেল নার্সারিকেই বেছে নিয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।
advertisement
আরও পড়ুন: বিহার-উত্তরাখণ্ড টাকা পেলেও বঞ্চিত বাংলা, গঙ্গা ভাঙন ঠেকাতে বাজেটে ‘শূন্য’ বরাদ্দ
খেজুরির ইড়িঞ্চি এবং চন্ডিপুরের ভগবানখালি কৃষি খামারে সিএডিসি’র তত্ত্বাবধানে রাজ্যের আর্থিক সহায়তায় দুটি মডেল নার্সারি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আম, আপেল, কুল, লেবু, পেয়ারা, টিস্যু কালচার কলা, পেঁপে, আঁতার কলমের চারা উৎপাদনের পাশাপাশি এই মডেল নার্সারি গড়ে তুলে বিভিন্ন রকমের সবজির চারা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। খড়, বাঁশ ও জিআই তারের পরিকাঠামো গড়ে সেটনেট লাগিয়ে আচ্ছাদন তৈরির মাধ্যমে সমস্ত পরিকাঠামোটাই একেবারে মাটির উপরে ঝুলন্ত অবস্থায় গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানেই হচ্ছে সিড বেড বা বিভিন্ন সবজির চারা তৈরির কাজ।
এই বিষয়ে সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ণ পর্ষদ তমলুক প্রকল্পের আধিকারিক উত্তমকুমার লাহা বলেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে এমন আধুনিক মানের মোট দুটি মডেল নার্সারি গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে বছরে এক একটিতেই প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষের মত ওলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, লঙ্কা, টম্যাটো, বেগুন সহ প্রয়োজনীয় গাছের চারা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর সেই চারাগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রতিপালনের জন্য বিভিন্ন স্বনির্ভর দলের মহিলাদের কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত বর্ষার পরই আশ্বিন-কার্তিক মাস থেকেই শুরু হয় শীতকালীন সবজি চাষ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বর্ষাকালে চারা তৈরি করা যায় না। তাই এই নতুন পদক্ষেপ সবজি চাষের ক্ষেত্রে। যা জেলার সবজি চাষকে নতুন পথ দেখাবে।
সৈকত শী