TRENDING:

South 24 Parganas News: ১৯ বছরে ১৯১ দেশ, ‘এই’ বার্তা দিতে বাসন্তীর সোমেনের সাইকেলে দুনিয়া জয়

Last Updated:

South 24 Parganas News:  এইডস নিয়ে সারা বিশ্বকে সচেতন করতে সাইকেলে একের পর এক দেশে পাড়ি দিয়েছেন বাসন্তীর যুবক সোমেন দেবনাথ। সারা বিশ্বের সাতটি মহাদেশের ১৯১ টি দেশ ঘুরে অবশেষে ১৯ বছর ৭ মাস বাদে বাড়ি ফিরেছেন তিনি

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এইডস নিয়ে সারা বিশ্বকে সচেতন করতে সাইকেলে একের পর এক দেশে পাড়ি দিয়েছেন বাসন্তীর যুবক সোমেন দেবনাথ। সারা বিশ্বের সাতটি মহাদেশের ১৯১ টি দেশ ঘুরে অবশেষে ১৯ বছর ৭ মাস বাদে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। তাঁর ১৯১ তম দেশ বাংলাদেশের সফর শেষ করে দমদম বিমান বন্দরে ফেরেন৷
advertisement

পরিবার, পরিজন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলেই সেদিন উপস্থিত ছিলেন তাঁকে স্বাগত জানাতে। সোমেন তাঁর এই যাত্রা পথে সাইকেলে চেপে প্রায় দু লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন, ২০ মিলিয়নের বেশি মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন, তাঁদের কাছে এইচআইভি সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।

মাত্র চোদ্দ বছর বয়সেই এইচআইভিতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে এই রোগ সম্পর্কে আরও জানার আগ্রহ জাগে তাঁর মধ্যে। জেদ চাপে আরও ভালো করে এই রোগ সম্পর্কে জানার। স্কুলের পড়াশুনা শেষ করে এইডস নিয়ে পড়াশুনা ও এটি প্রতিরোধের জন্য রিজিওনাল এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি থেকে স্পেশাল ট্রেনিং করে সে। সেই শুরু, এই মারণ রোগ সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত বাসন্তীর এই যুবক।

advertisement

আরও পড়ুন – MS Dhoni Jersey: সচিনের পর মাহিকে লেজেন্ড মানল বিসিসিআই, ৭ নম্বর আর কাউকে নয়, বোর্ডের নয়া সিদ্ধান্ত

View More

প্রাণীবিদ্যা নিয়ে পড়াশুনা করে বি এ তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হতেই ২০০৪ সালের ২৭ মে এইচ আই ভি এইডস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে সাইকেলে চেপে বাড়ি থেকে রওনা দেয় সে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি দেশে প্রচার সেরে বাড়ি ফেরেন, কিন্তু এইডস সম্পর্কে সচেতন বার্তা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে কিভাবে পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। ঠিক করেন সাইকেলে চেপেই বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে গিয়ে এই এইডস সম্পর্কে সাধারণ বিশ্ববাসীকে সচেতনতার বার্তা দেবেন।

advertisement

সেই মত, কয়েক মাসের মধ্যেই বিশ্ব ভ্রমণের জন্য বেড়িয়ে পরেন তিনি। প্রথমেই এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত ২৪ টি দেশ ঘুরে ইউরোপে পা রাখেন সোমেন। সেখানেও তিন বছরের মধ্যে আরও ৪৫ টি দেশে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা দেন। ২০১২ সালে তিন মাসের জন্য গ্রিনল্যান্ডে ও যান। সেখান থেকে ২০১২ সালের শেষের দিকে বেড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোমেন। একের পর এক দক্ষিন আফ্রিকা, ব্রাজিল ঘুরে আন্টারটিকা পৌঁছন। সেখান থেকে পানামা, মেক্সিকো হয়ে আমেরিকা। সব শেষে এশিয়া মহাদেশের বাকি দেশগুলিতে প্রচার সেরে নিজের দেশে ফিরেছেন।

advertisement

মূলত, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ধরণের সামাজিক সংগঠন, সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানগুলিতে গিয়ে গিয়ে এই সচেতনতার বার্তা দিয়েছেন। এই যাত্রা পথে বিভিন্ন বৈচিত্রের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রদূতরা তাঁর পাশে থেকেছেন। প্রবাসী ভারতীয় থেকে শুরু করে ভারতের রাষ্ট্রদূতরা তাঁকে সাহায্য করেছেন। এই কাজে সাহস জুগিয়েছেন। এই কাজে যদি একজন মানুষেরও উপকার হয় তাহলেই তিনি সফল হয়েছেন বলেই মনে করেন সোমেন।

advertisement

বাসন্তীতে বাড়ি হলেও বাবা মারা যাওয়ার পর মাকে নিয়ে সোমেনের অন্য দুই ভাই সোনারপুরে থাকেন। সোনারপুর সংলগ্ন সুভাষগ্রাম এলাকায় একটি জায়গায় সংগ্রহশালা ও গ্লোবাল ভিলেজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সোমেনের। বিশ্বভ্রমণ করে পাওয়া জিনিষপত্র একদিকে যেমন সেই সংগ্রহশালায় থাকবে, তেমনি গ্লোবাল ভিলেজ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এইডস আক্রান্তদের পাশে থাকার জন্য কাজ করা হবে। পাশাপাশি সারা বিশ্বের মানুষের একটা মিলনস্থল গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলেও দাবি তাঁর। তবে আগামী কিছুদিন বিশ্রাম চান তিনি। বিশ্বভ্রমণের নানা স্মৃতি নিয়ে বই লেখার কাজে হাত দিয়েছেন সেই কাজ শেষ করতে চান তিনি। এই পথ অতিক্রম করতে গিয়ে তালিবানিদের হাতে বন্দী থাকতে হয়েছে, তাঁদেরকে রান্না করে খাওয়াতে হয়েছে দিনের পর দিন, গ্রীনল্যান্ডে এস্কিমোদের সঙ্গে থেকেছেন, কেনিয়ায় মাসাইদের সঙ্গেবাস করেছেন, শ্রীলঙ্কায় এলটিটি জঙ্গীদের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন। চিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরতে মরতে বেঁচেছেন, এছাড়াও নানা অভিজ্ঞতা হয়েছে এই যাত্রাপথে। সেগুলো নিয়েই বই লিখছেন তিনি।

সোমেনকে এতদিন পর ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সকলেই। আপাতত সোমেন সুভাষগ্রামে রয়েছেন তাঁদের পিপিল হাউসে। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর ক্যানিং থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পৌঁছবেন বাসন্তীতে নিজের জন্মভূমিতে। ঐদিন সুন্দরবন সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও বহু মানুষ যোগ দেবেন তাঁর সাইকেল যাত্রায়। এছাড়াও নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে তাঁকে ঘিরে। এভাবেই সুন্দরবন বরণ করবে তাঁর ঘরের ছেলেকে। এদিকে সোমেন দেশে ফেরায় বিদেশের তাঁর বহু বন্ধু, বান্ধবীরা দেখা করতে আসতে শুরু করেছেন। বিশ্ব ভ্রমণের যাত্রাপথে এঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল তাঁর। ইতিমধ্যেই ওমানের রাজকুমারী নাদ্যা এসেছেন সুভাষগ্রামে।

Suman Saha

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
South 24 Parganas News: ১৯ বছরে ১৯১ দেশ, ‘এই’ বার্তা দিতে বাসন্তীর সোমেনের সাইকেলে দুনিয়া জয়
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল