এদিন বিদ্যালয়ে এসে হাজির হয় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা। ছিল সুদীপ, সায়ন, তিস্তা, অয়ন্তিকা, গৌরব, কুন্তল, হরিদাসরা। উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়ন দে ও সহ শিক্ষক সৌমেন মণ্ডল। প্রথমেই ওদের একটি করে সার্ভে শিট বা সমীক্ষা পত্র দেওয়া হয় এবং হাতে তুলে দেওয়া হয় জীববৈচিত্রের নানা বই। বলা হয় – বাংলার সাপ, জলজ উদ্ভিদ, বাংলার মশা মাছি, শাক পাতা, গাছপালা, পশুপাখির ওপরে পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদের বই এর ছবি দেখে ওরা বাস্তবের মাটিতে চিনে নেবে ও নাম লিখবে সার্ভে শিটে। এরপর ওদের নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী নওপাড়া গ্রামের একটি জলাভূমি ও বনাঞ্চলে ঘেরা জায়গায়।
advertisement
ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক শিক্ষিকাদের তত্ত্বাবধানে চিনে নেয় গাছপালা ও পশুপাখি কীটপতঙ্গদের। সেগুলো নিজেদের চোখে দেখে বই এর ছবির সঙ্গে মিলিয়ে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত খাতা বন্দি করে নেয়। বাইনাকুলার দিয়ে ওরা দূরে গাছের ডালে বসা পাখি দেখে। থার্মোমিটারের মাধ্যমে ওদের দেখানো হয় এমনি রাস্তাঘাট ও জলাভূমি এলাকায় গাছপালা যুক্ত এলাকায় তাপমাত্রার তারতম্য। সেই সব তথ্যও ওরা খাতাবন্দি করে। মশা মাছি, জোঁক, ব্যাঙ, মাকড়শাদের হরেক রকম প্রজাতির সঙ্গে সরাসরি পরিচয় ঘটে ওদের। ওরা দেখে বেত গাছ যা একসময় এই এলাকার মানুষের কুটিরশিল্পে একটা বড় মাধ্যম ছিল। ওরা বিভিন্ন প্রজাতির লতা গাছ, চার রকমের পানা গাছ, ফার্ণ, ফুল গাছ-সহ নানা উদ্ভিদের সম্পর্কে জানে।
ছোটদের অনুভূতি – এভাবে গাছপালা পশুপাখি চাক্ষুষ দেখে চিনে নেওয়ার পর্বটা খুব ওদের মনে ধরেছে। বাড়িতে গিয়েও ওরা এভাবে প্রকৃতিকে চিনবে জানবে। প্রধান শিক্ষক বলেন – ছোটদের মধ্যে এলাকার জীববৈচিত্রের বিপুল ভাণ্ডারকে চেনাতে, সেগুলোর গুরুত্ব পরিবেশে কতটা তা বোঝাতে পারলে তবেই ওদের মধ্যে তা রক্ষা করার তাগিদ তৈরি হবে। এই কাজে এই ধরণের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের কর্মসূচি অনেকটাই সাহায্য করবে। গরমের ছুটি শেষ হলেই ওরা এই পর্যবেক্ষনের ওপরে প্রতিবেদন লিখে জমা করবে বিদ্যালয়ে। আমাদের বিদ্যালয়ের দেওয়াল পত্রিকায় সেরা প্রতিবেদনগুলো ছবি-সহ তুলে ধরা হবে। অভিভাবক এবং স্থানীয় শিক্ষা অনুরাগী মানুষ বিদ্যালয়ের এই ধরণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
রাকেশ মাইতি





