আবাসিকদের এবার সংশোধনাগারেই দেওয়া হচ্ছে স্বনির্ভরতার পাঠ। তাদের আগামীতে স্বনির্ভর করে তুলতে এবার ঝাড়গ্রাম জেলায় অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সংশোধনাগারে আবাসিকদের স্বনির্ভরতায় মাশরুম চাষের দিশা দেখাচ্ছে কারা ও উদ্যান পালন দফতর।
advertisement
বিচারাধীন আবাসিকরা সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পুরনো কাজে ফিরতে পারে না অনেকেই। সংশোধনাগারে থাকার কারণে সমাজের বহু মানুষ তাদের আসামির চোখে দেখে বলেই অভিযোগ। ফলে মূল স্রোতে ফিরতে বাধা পেতে হয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি হওয়া আবাসিকদের। সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আর্থিক রোজগারে যাতে সমস্যা না সৃষ্টি হয় তাই, সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীনদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে মাশরুম চাষের দিশা দেখাচ্ছে কারা বিভাগ ও উদ্যান পালন দফতর। ঝাড়গ্রাম জেলা বিশেষ সংশোধনাগারে এবার স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বিশেষ মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিশেষ সংশোধনাগারের সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন আবাসিকদের ঝাড়গ্রাম জেলা উদ্যান পালন দফতরের সহযোগিতায় সংশোধনাগারের উদ্যোগে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জেলা বিশেষ সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত জন মহিলা-সহ ২০৫ জন আবাসিক রয়েছে সংশোধনাগারে। প্রথম পর্যায়ে ৫০ জন আবাসিককে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫০ জন আবাসিক আরও ৫০ জনকে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেবে। এইভাবেই সকল আবাসিককে মাশরুম চাষে দক্ষ করে তোলা হবে বলে দাবি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার আয়তায় জেলা উদ্যান পালন দফতর মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক তামসী কোলে বলেন, ‘বিশেষ প্রজাতির মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৫০ জন আবাসিককে। মাশরুম চাষের ১০০টি ব্যাগও তুলে দেওয়া হয়েছে। এক একটি ব্যাগ থেকে দুই থেকে আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে। মাশরুম চাষের পদ্ধতি হাতে-কলমে শেখানো হয়েছে। যেন তারা অন্যদেরও সহজে শেখাতে পারে।’
প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে খড়কুটো ও মাশরুম বীজ পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে নিয়মত জল স্প্রে করলেই, ২০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে মাশরুম উৎপন্ন হয়ে যায়। ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার রাজেশ কুমার মন্ডল বলেন, ‘সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পুরোনো কাজে ফেরত যেতে পারেন না অনেকে। তাই কারা দফতরের সহযোগিতায় আবাসিকদের উদ্যান পালন দফতরের উদ্যোগে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আবাসিকরা আগামীদিনে অন্যান্যদেরও প্রশিক্ষণ দেবে’।
সংশোধনাগারে একটি ঘরকে মাশরুম চাষের জন্য তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই সারা বছর ধরে প্রশিক্ষণ ও মাশরুম চাষ চলবে। ফলে ভাল পরিমাণে মাশরুম উৎপাদন হবে বলে আশাবাদী সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।






