বর্তমান সময় সারা বছরই মাশরুমের চাহিদা রয়েছে বাজারে। মাশরুম চাষের মাধ্যমে একজন বেকার যুবক-যুবতী বা বাড়ির গৃহবধূরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আর এইসব গ্রামের গৃহবধূ ও বেকার যুবক-যুবতীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে প্রশাসন। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। সরকারি প্রশিক্ষণ পেয়ে মাশরুম চাষ করে গ্রামের মহিলারা সংসারের আর্থিক হাল ফেরাচ্ছে।
আরও পড়ুন- যাতায়াতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ! বেহাল রাস্তা সংস্করণে ২২ কোটি খরচের পরিকল্পনা
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে মাশরুম চাষ গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। কারও ১০০টি বেড রয়েছে, কারও আবার ২০০টি। তমলুক ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে বেশ কিছু গৃহবধূ প্রতিদিন মাশরুম বিক্রি করে গড়ে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা রোজগার করছেন।
রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর ধরে মাশরুম চাষ করছেন। মাশরুম চাষের জন্য প্রয়োজন ধানের খড়। খড় দিয়েই তৈরি হয় মাশরুম চাষের জন্য বেড। খড়ের সঙ্গে প্রতিটি স্তরে দেওয়া হয় মাশরুমের বীজ। এক একটি বেড তৈরি করতে খরচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এক একটি বেড থেকে মাশরুম পাওয়া যায় ঘরে তিন থেকে চার কেজি। যার বাজার মূল্য ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফলে মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
সি এ ডি সি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর উত্তম কুমার লাহা জানান, ‘মাশরুম চাষ বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে তাদের বিকল্প কাজের দিশা দেখাতে পারবে। মাশরুম চাষের মধ্য দিয়ে একজন বেকার যুবক-যুবতী মাসে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবে।
এছাড়াও ঘরের গৃহবধূরাও বাড়িতে বসে না থেকে এই কাজ করলে তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। এরকম একটি গৃহবধূ বাড়ির কাজের পাশাপাশি সফলভাবে মাশরুম চাষ করে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ছটি ব্লকের কয়েক হাজার মহিলা মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে মাশরুম চাষ করছেন।
একজন মহিলা জানান, মাশরুম চাষ অনেকটাই সহজ। বছরের সারা সময় মাশরুম চাষ হলেও শীতের সময় সব থেকে বেশি চাষ করা হয়। মাশরুম চাষের জন্য প্রথমে ধানের খড়কে ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে চুন মিশ্রিত জলে ডুবিয়ে রাখা হয়। জল থেকে ছেঁকে ছায়া ঘেরা জায়গায় শুকিয়ে নেওয়া হয়। তার পর সেই খড়গুলোকে প্লাস্টিক বেডে ভরা হয়। ওই বেডের চারটি স্তরে মাশরুম বীজ ফেলে দেওয়া হয়। ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে মাশরুম ফুটতে শুরু করে।
আরও পড়ুন- নৈহাটিতে মমতা! বড়মা কালীর মন্দিরে পুজো, ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোঘণা
বাজারে বর্তমানে ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দাম প্রতি কেজি মাশরুমের। ফলে কম পুঁজিতে অল্পদিনে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় মাশরুম চাষে। গ্রামের মহিলারা প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
সৈকত শী