এক সময় মুর্শিদাবাদ ছিল নবাবের শহর। আজ বহু যুগ অতিক্রান্ত। না আজ সেই নবাবিয়ানা আছে। না আছে জৌলুস। নবাব পরিবারের নীল রক্ত শরীরে বয়ে চলেছেন সৈয়দ রেজা আলি মির্জা৷ বর্তমান নবাব পরিবারের অন্যতম প্রবীণ সদস্য। যিনি জনগণের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলাতে ছোটে নবাব নামে অধিক পরিচিত। ছোট নবাব রেজা আলি মির্জার জন্ম লালবাগ শহরের বেগম মহলে। যদিও বর্তমানে সেই মহল আজ প্রায় ধ্বংস।
advertisement
কিছু ভগ্ন দালান, বারান্দা বেচেঁ আছে। চারিদিকে বড় বড় ছোপ ছাড় আছে। এক সময়ের এইমহল ছিল বিশাল। একদা ছিল নিজের বাসগৃহ, সেখানে তার বেড়ে ওঠা সেখানেই ছিল তার কর্মজীবন। সেটা থেকে ভাগ্যের পরিহাস আর কিছুই হয়না। তবে সাধারণের থেকে সাধারণ হয়ে তিনি আজ দিন কাটান। যদিও গভীর রাত্রে জেগে ওঠে অতীতের সেই সোনালি দিন।
বর্তমানে ছোট নবাব রেজা আলি মির্জা তিনি সাইকেলে চেপে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে রেখেছেন। দিন রাত সাইকেলে করেই ঘুরে বেড়ান এ প্রান্ত থেকে সেই প্রান্ত। খোঁজ নেন কেমন আছেন শহরের মানুষজন। শহরের এক কোনে দ্বিতল ঘরে বসবাস করেন পরিবার নিয়ে। বর্তমানে তার স্ত্রী, পুত্র, পুত্র বধূ, নাতনি নিয়ে সংসার যাপন করেন ছোটে নবাব রেজা আলি মির্জা । ঘরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ইতিহাস। সিরাজউদ্দৌলাকে আজও মসনদে রেখে সম্মান জানান বর্তমানের এই ছোটে নবাব রেজা আলি মির্জা ।
আগে হাজারদুয়ারি চত্বরে কাজ করলেও এখন কোনও পেনশন পান না। তাঁর সন্তান বর্তমানে হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছোটে নবাব রেজা আলি মির্জা লোকাল ১৮ বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘‘এখন কোনও সরকারি ভাতা তাঁরা পান না। যা নিয়ে বারবার আবেদন করা হয়েছে। একাধিক কেস চলছে যা আদালতে বিচারাধীন। কেন্দ্রীয় সরকার, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কাছে আবেদন করা হয়েছে। আগে আমি চাকরি করতাম, কেয়ার টেকারের কাজ করতাম। আমি খুব কষ্ট করে সংসার চালিয়েছি। বর্তমানে আমার সন্তান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক।’’
তবে রাজ প্রাসাদ নেই। নেই রাজ্যেপাট। তবুও মানুষের মধ্যে হৃদয়ের মনি কোঠায় বেচেঁ আছেন একদা ছোটে নবাব রেজা আলি মির্জা ।
Kaushik Adhikary