প্রতি বৃহস্পতিবার এই হাট বসে জাঁকজমকের সঙ্গে। তবে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনওভাবে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমে ওঠে কাশীপুরের এই ঐতিহ্যবাহী বাজার। হাটের এক প্রান্তে থাকে সবজির বাজার, যেখানে স্থানীয় চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেন। আর অন্য প্রান্তে জমে ওঠে বিশাল পশুর হাট। যা এই অঞ্চলের অন্যতম আকর্ষণ। গরু, ছাগল, ভেড়া থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির গৃহপালিত পশুর কেনাবেচা হয় এখানে। বহু দূর-দূরান্তের মানুষ আসেন এই হাটে। কেউ আসেন বিক্রি করতে, কেউ কিনতে, আবার কেউ বা কেবল ঐতিহ্যের সাক্ষী হতে।
advertisement
শোনা যায়, রাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিং দেও শুধু হাটের সূচনা করেই থেমে থাকেননি। তিনি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য এমন ব্যবস্থা করেছিলেন যে, হাটে যদি কোনও ব্যবসায়ীর জিনিস বিক্রি না হয়, তবে রাজপরিবার সেই সামগ্রী নিজ খরচে ক্রয় করত। রাজপরিবারের এই উদ্যোগই কাশীপুর হাটকে দ্রুত জনপ্রিয়তা ও স্থায়িত্ব এনে দেয়। প্রাচীন এই পশু হাটকে ঘিরে রয়েছে বহু গল্প, বহু ইতিহাস।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
একসময় দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি হাটের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হত, হাওড়ার মঙ্গলার হাট এবং পুরুলিয়ার কাশীপুরের পশু হাট। সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেলেও কাশীপুরের এই শতবর্ষের হাট আজও তার ঐতিহ্য, প্রাণচাঞ্চল্য ও সামাজিক গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রেখেছে। আজও এই হাট কাশীপুরবাসীর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু একটি বাজার নয়, বরং কাশীপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সামাজিক বন্ধনের এক অমূল্য প্রতীক। শতাব্দী পেরিয়ে আজও কাশীপুর হাট তার অতীত গৌরবকে ধারণ করে বর্তমানের জীবনধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে।





