এখানে এলেই মন ভরে যায় ভক্তিতে, আর মন্দিরের ইতিহাস শুনতে শুনতে আপনি ফিরে যাবেন প্রায় দুই শতাব্দী আগের ব্রিটিশ শাসনকালে। প্রায় ২০০ বছর আগে রামনগরের চৌধুরী বাড়ির বল্লভ চৌধুরীর পূর্বপুরুষগণ এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। পাশের পদুবাড়ি গ্রামের জমিদার সরোজরঞ্জন রায় (লালাজী) এখানে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু তাই নয়, মন্দিরের নিয়মিত সেবা ও পুজোর জন্য তিনি দেবোত্তর সম্পত্তিও দান করেন। সেই সময় থেকে আজও চন্দনপুরের চৌধুরী পরিবার এই মন্দিরে নিয়মিত পুজো হয়ে আসছে।
advertisement
আরও পড়ুন: এই বিশেষ ‘ধান’ চাষে ফলছে ‘সোনা’…! খরচ এক, ফায়দা ‘ডবল’! ‘বড়লোক’ হওয়া আটকে কে?
মন্দিরের সঠিক স্থাপনার বছর জানা না গেলেও জমিদার পরিবারের বর্তমান সদস্যদের দাবি—প্রায় দুই শতাব্দী আগে থেকেই মন্দিরে নিয়মিত পুজো চলছে। এই মন্দিরটি শুধু ভক্তি নয়, স্বাধীনতা আন্দোলনেরও অংশ। স্থানীয়দের কথায়, ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল ছিল এই চৌধুরী বাড়ি। ব্রিটিশ পুলিশ সেই খবর পেয়ে একসময় আগুন লাগিয়ে দেয় বাড়িটিতে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বহু ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র, নথিপত্র। তবুও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে টিকে যায় মন্দিরটি। আজও যেন সেই আগুনে পোড়া অতীতের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই জগন্নাথ মন্দির।
আরও পড়ুন: স্বামী নেই…! তবু ‘কার’ নামে আজও সিঁথিতে সিঁদুর পরেন রেখা? নিজেই খুলে দিয়েছিলেন রহস্য!
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পৌঁছেছিল। কিন্তু বর্তমানে চৌধুরী পরিবারের উদ্যোগে মন্দিরটি নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষের সহায়তায় পুনর্নির্মাণের পর এখন মন্দিরের ভিতর-বাহিরে দেখা যায় অপূর্ব কারুকার্য। স্থাপত্যে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে প্রাচীন কলিঙ্গ রীতির ছোঁয়া। মূল গর্ভগৃহে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে, যা পূর্ণ ভক্তি ও আস্থার প্রতীক।
দিঘার কোলাহল থেকে কয়েক মুহূর্তের শান্তি খুঁজে নিতে চাইলে এই মন্দির হতে পারে আপনার জন্য অনন্য গন্তব্য। দিঘা থেকে টোটো বা অটো করে সহজেই পৌঁছন যায় রামনগরের চন্দনপুরে। আবার এগরা দিক থেকে এলে দেপাল বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটো, রিক্সা বা টোটোতে আসা যায়। কাঁথির দিক থেকেও রামনগর বাসস্ট্যান্ড হয়ে সহজেই পৌঁছান সম্ভব এই মন্দিরে।