সুমনের বাবা রামদেব বর্মন দিন মজুর মা সুজাতা বর্মন পরিচারিকার কাজ করেন। তাদের দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে মুক-বধির। মেয়ে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। সুমনও কলেজে পড়ে। পাঁচ জনের সংসার চালাতে খুব কষ্ট করেন দুজনে। একটা টালির চালের ঘর। তাতে কোনো ভাবে দিন গুজরান হয়। তবু ছেলে মেয়ের খেলায় উৎসাহ দেন।
advertisement
মেয়ে রিয়া গতকাল দূর্গাপুর থেকে খো খো খেলে বড় ট্রফি নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। মা কালনায় রান্নার কাজে গিয়েছিলেন তিনিও ভোরে বাড়ি ফিরেছেন। পাড়ায় সুমনের বন্ধুরা বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার জন্য জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়েছিল।ভারত জিতছে, সুমন ভালো খেলেছে খুশি সবাই। কিন্তু বিশ্বকাপ জিতিয়েও সুমনের বাড়ির অবস্থা ফিরবে কি না তা নিয়ে দ্বিধা কাটে নি। রিয়া তার দাদার সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলে। কতটা কষ্ট করে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। সাফল্য এসেছে। কিন্তু পেটের জ্বালা মেটেনা। তাই একটা চাকরি চাই।
সুমনের বাবা মা বলেন,আমরা খুব গরীব তাই অন্য খেলায় ছেলে মেয়েকে দিতে পারিনি। খো খো খেলেই তারা মুখ উজ্বল করছে। কিন্তু সংসার টানতে তাদের কষ্ট করে যেতে হচ্ছে। ছেলে বিশ্বকাপ জিতেছে এবার সেই কষ্ট লাঘব হবে আশায় তারা।
মিলন পল্লীর বাসিন্দারা জানান,সুমনের একটা চাকরির প্রয়োজন।ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা হলে যে উন্মাদনা চোখে পড়ে খো খো খেলায় তা নেই। প্রশাসন বা জন প্রতিনিধিরা কেউ সুমনের বাড়িতে গিয়ে খোঁজও নেয়নি। তবু পাড়ার গর্ব সুমন পরশু বাড়ি ফিরলে উৎসব হবে ব্যান্ডপার্টি হবে মিলন পল্লীতে। একসময় ঠিক মত খেতে দিতে পারেননি, খেলার জুতো পোশাক কেনা ছিলো বিলাসিতা। সেই ছেলেই খো খো বিশ্বকাপ জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আনন্দে চোখে জল সুমনের মা বাবার। এবার কি ভাঙা ঘরটা ঠিক হবে,অবস্থা পাল্টাবে? জানা নেই। সুমনের মা বাবা চান ছেলে খেলুক,আরো নাম করুক।
রাহী হালদার





