স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হলদিডাঙ্গা গ্রামের প্রায় অর্ধ-শতাধিক পরিবার এই শিল্পের ওপর প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। বাঁশ দিয়ে তৈরি খই চালা, ডোল খাঁচা, খাটি ডালি, টুকরি ডালি, ঝুড়ি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করেই চলে তাদের জীবনসংসার। তবে, প্রকৃতপক্ষে বাঁশ-বেতের স্থান অনেকটাই প্লাস্টিক সামগ্রী দখল করে নিয়েছে।
advertisement
বর্তমানে বাঁশ ও বেতের সামগ্রী থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী কেনার প্রতি আগ্রহ বেশি। চড়া দামে বাঁশ কিনতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন তাঁরা। ফলে বাঁশ ও বেতের সামগ্রীর ব্যয়ও বেশি হচ্ছে। তবুও বাপ দাদার পেশাকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি সংসারের হাল ফেরাতে বেতের তৈরি খই চালনি একটানা নিরপেক্ষভাবে বানিয়ে চলেছেন আন্না দেবী। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্বামী জগন্নাথ দাস।
এবিষয়ে শিল্পী আন্না দাস জানান, “প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি ও তাঁর স্বামী এই খই চালনি বানিয়ে বিক্রি করছেন। সকাল হলেই সংসারের যাবতীয় কাজ সামলে বসে পড়েন বেত দিয়ে খই চালনি বুনতে। কারণ এটাই যে তাঁদের একমাত্র পেশা। সারাদিনে প্রায় ৫-৬ টি খই চালনি তৈরি করেন। একসঙ্গে অনেকগুলো বানানো হলে পাইকারি দামে বিক্রি করেন তাঁরা। তাই সকাল থেকেই বাঁশ থেকে বের তুলে খই চালনি বুনতে চরম ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। দাম রয়েছে ১০০-১৫০ টাকা।”
বালুরঘাট ব্লকের হলদিডাঙ্গা এলাকায় বেত শিল্পীদের বাড়িতে গেলেই বোঝা যায় অভাব প্রতিটি জায়গা থেকে উঁকি মারছে। একটা সময়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে যেমন ছিল বেত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রচুর শিল্পী। পাশাপাশি, শিল্পীদের তৈরি করা পণ্যের কদরও ছিল অনেক।
কিন্তু দুর্মূল্যের বাজারে যেভাবে অন্যান্য পণ্যের দাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে তাদের বানানো জিনিসের দাম খুব একটা বারেনি বললেই চলে। তবে, সরকারিভাবে কোন সুযোগ সুবিধা পেলে আবারও ফিরে আসতে পারবে নিজস্ব শিল্পে। বৃদ্ধি পাবে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য বাঁশের তৈরি হস্ত ও কুঠিরশিল্পের কাজ, এমনটাই আশা করছেন শিল্পী আন্না দাস সহ এলাকার অন্যান্য শিল্পীরা।
সুস্মিতা গোস্বামী