কারণ, সারা বছরের সীমিত আয়ের ভার সামলে এই কয়েক মাসই তাদের হাতে আসে উপার্জনের সোনালি সুযোগ। এগরার এই মণ্ডপশিল্পীরা মূলত কাপড়, বাঁশ, কাঠ ও আলোকসজ্জার মাধ্যমে তৈরি করেন চিত্তাকর্ষক প্যান্ডেল। সারা বছর বড় কোনও অনুষ্ঠান না থাকায় আয়ের সুযোগ কম। সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন লেগেই থাকে। সন্তানদের নতুন জামা কাপড় কিংবা ভাল খাবার দেওয়া অনেক সময়ই হয়ে ওঠে দুষ্কর। কিন্তু দুর্গোৎসব আসতেই বদলে যায় চিত্র।
advertisement
আরও পড়ুন : ভিনরাজ্যের প্যান্ডেলেও আসানসোলের দাপট! রাতদিন এক করেছেন শিল্পীরা, চিন্তা শুধু বৃষ্টি
বিভিন্ন ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে একের পর এক বায়না আসে। দিন-রাত এক করে শিল্পীরা গড়ে তোলেন এক-একটা শিল্পকর্ম, যা পরে সারা জেলার মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়। এই মরশুমি আয়ের ওপরে ভরসা করে এগরার মণ্ডপশিল্পীরা সারা বছরের সংসার চালান। পুজোর সময় যে টাকাটা হাতে আসে, সেটাই বছরের বাকিটা সময়ে পরিবারকে টিকিয়ে রাখার মূল অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। তাই দুর্গোৎসবের বায়নার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন তারা।
আরও পড়ুন : ফিকে পুজোর গন্ধ, কাশবনে ছবি তোলার হিড়িক উধাও! অতিবৃষ্টিতে সব সর্বনাশ…
এবছরও বায়না বেড়েছে বলে খুশি শিল্পীরা। অনেকেই জানিয়েছেন, এই আয় দিয়ে অন্তত সন্তানদের নতুন জামাকাপড় কিনে দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। সারা বছর যাদের টানাটানির সংসারে ভাল খাবার জোটে না, পুজোর এই ইনকামেই ঘরে ফিরবে অন্নের স্বাদ, মুখে ফুটবে হাসি। এক কথায়, দুর্গোৎসবের এই মরশুম যেন তাদের কাছে শুধু উৎসব নয়, জীবনের আশা জাগানোর সময়। দুর্গোৎসব মানেই শুধু ঢাকের বাদ্য, আলোর ঝলকানি বা দেবী দর্শন নয়, এটা হল হাজারও মণ্ডপশিল্পীর স্বপ্নপূরণের সময়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সারা বছরের অভাব-অনটনের অন্ধকার দূর করে এই পুজো এনে দেয় তাদের সংসারে আলো। তাই প্রতিটি রঙিন আলো আর শিল্পে সাজানো প্যান্ডেলের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এগরার শিল্পীদের ঘাম, পরিশ্রম আর অদম্য আনন্দ। বলা যায়, দুর্গোৎসব শুধু দেবীর আগমনের নয়, মণ্ডপ শিল্পীদের জীবনে আশীর্বাদ নামারও উৎসব।