দিঘার সবচেয়ে বড় এই বাজারটির নামকরণ হয়েছিল ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর স্মৃতিতে। জানা যায়, একসময় এই জায়গাটি ছিল খেলার মাঠ। নেহরু দিঘায় এসে জনসভা করেছিলেন, সেখান থেকেই মাঠটির নাম হয় ‘নেহরু ময়দান’। পরে ডিএসডিএ-র অধীনে এলাকা চলে আসার পর ময়দানে গড়ে ওঠে এই বাজার। বর্তমানে এখানে ডিএসডিএ কর্তৃক নির্মিত প্রায় ৩০০টি স্থায়ী স্টল রয়েছে। তার সঙ্গে আরও প্রায় ২০০টি দোকান ও পসরা প্রতিদিন বসে। যেখানে বিক্রি হয় সবজি, মাছ, মাংস-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। এছাড়া পর্যটকদের আকর্ষণ করে ঝিনুকের তৈরি নানারকম সামগ্রীও।
advertisement
তবে বাজারটিতে বহু সমস্যা রয়েছে। তিন দশক আগে বাজার চত্বরে ইট বিছিয়ে চাতাল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এখন সেই চাতালের অনেক জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সেই গর্তে জল জমে থাকে। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। ভারী বৃষ্টি হলেই বাজারের মধ্যস্থলে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে যায়, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য ভোগান্তির কারণ। ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন কারণ অনেক সময় জল উঠে আসে দোকান ও পসরায়। নিজেদের মতো করে সমস্যা সমাধানে অনেক ব্যবসায়ী চৌকি পেতে তার উপর বাঁশের কাঠামো দিয়ে ত্রিপলের ছাউনি বানিয়েছেন। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি, বরং ক্রেতাদের বাজারহাট করতে হয় প্রবল অসুবিধার মধ্যে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এছাড়াও, বাজারে আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার পর অন্ধকারে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও কেনাবেচা দু’টোই কঠিন হয়ে ওঠে। অথচ প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এখানে আসেন। ফলে একদিকে, এই বাজার দিঘার ব্যবসা ও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র হলেও, অন্যদিকে অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে তার পরিচিতি ধীরে ধীরে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
দিঘার অর্থনীতি ও পর্যটনের অন্যতম স্তম্ভ এই নেহরু মার্কেট। কিন্তু অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের অভিজ্ঞতাকে নষ্ট করছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, দ্রুত বাজারে আধুনিক নিকাশি ও আলোর ব্যবস্থা করা হোক। যাতে দিঘার পর্যটনশিল্পের সঙ্গে মানানসই হয়ে ওঠে এই ঐতিহ্যবাহী বাজার। উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নেওয়া গেলে নেহরু মার্কেট শুধু দিঘার নয়, সমগ্র পূর্ব মেদিনীপুরের একটি মডেল মার্কেট হয়ে উঠতে পারে।