অতীতের পাতার স্মৃতিচারণ করলেই সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের কথা উঠে আসে। সেই জমি আন্দোলনে তাপসী মালিকের হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হন সুহৃদ দত্ত। নিম্ন আদালতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দেওয়া হয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাম নেতৃত্বরা। তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডে এখনো রায় ঘোষণা হয়নি তার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ সুহৃদ দত্তের।
advertisement
আরও পড়ুন: SSC নিয়োগ দুর্নীতিতে বড় আপডেট, হাইকোর্টে ফিরল সব মামলা! ২ মাসেই তদন্ত শেষের নির্দেশ
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা জমি থেকে বাজেমেলিয়ার তরুনী তাপসী মালিকের অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয় ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর।সিঙ্গুরের জমি আন্দলোনে থাকা তাপসীকে ধর্ষন করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।যদিও সিবিআই চার্জশিটে ধর্ষনের ধারা ছিলনা। সেসময় বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মতলায় অনশন আন্দোলন করছেন কৃষকদের পক্ষে।সিবিআই সেই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর সিপিএম কর্মী দেবু মালিককে ১৯ জুন দিল্লিতে গ্রেফতার করে।পাটিয়ালা আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসে।দেবু মালিককে জেরা করে তৎকালীন সিপিএম সিঙ্গুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সুহৃদ দত্তকে জেরা করে।
আরও পড়ুন: অভিনব দুর্নীতি এবার হাবড়ায়! কোটি-কোটি টাকার ‘খেলা’, নেপথ্যে কি সেই মন্ত্রীই?
২৭ জুন ২০০৭ সালে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। দুজনেরই পলিগ্রাফ টেস্ট হয়। চন্দননগর আদালতে মামলা চলতে থাকে।২০০৮ সালের ১১ নভেম্বর সুহৃদ দেবু দুজনেরই যাবজ্জীবন সাজা হয় নিম্ন আদালতে।পরে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তারা। সেই মামলার এত বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। সিপিএম নেতৃত্ব বারবার অভিযোগ করেছেন সুহৃদ দত্ত ষড়যন্ত্রের শিকার। যে মামলায় নিম্ন আদালত তাকে সাজা দিয়েছিল হাইকোর্ট সেই মামলায় জামিন পেয়েছিলেন অথচ সেই মামলা এত বছর পরেও নিষ্পত্তি হলনা।
রাজনৈতিক জীবনে সুহৃদ দত্ত ১৯৬৭ সালে সিপিএম পার্টির সদস্য পদ পান। কৃষক সভার হুগলি জেলা সম্পাদক ছিলেন ১৯৮২-৮৩ সালে।সিঙ্গুর জোলান কমিটির সদস্য ছিলেন ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত।সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন ১৯৮৩ থেকে ২০০৩ সাল তিন বার। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর সিপিএম নেতৃত্ব তার বাড়িতে যান।কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ শ্রদ্ধা জানান।সুহৃদ দত্তর চোক্ষু দান করার পর বৈদ্যবাটি হাতিশালা ঘাটে দেহ সৎকার হয়।
—- রাহী হালদার