নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবারের বিজয় কোন রকমে মশলা মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতেন।একমাত্র মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে চিকিৎসক করার স্বপ্ন দেখতেন একসময়। আচমকা সব স্বপ্ন ছারখার হয়ে যায়। গত প্রায় দুবছর আগে হৃদরোগ ধরা পড়ে বিজয়ের।বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে সবশেষ। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের কাছে চিকিৎসা করানোও দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে। ব্যবসা বন্ধহয়ে যায়। ওষুধের জন্য প্রতিমাসে প্রয়োজন প্রায় দুহাজার টাকা! এমনকি দৈহিক গঠনও হ্রাস হতে থাকে বিজয়ের।
advertisement
আরও পড়ুন: পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় নজির গড়ল সাগর ব্লক! মিলল স্যানিটাইজেশন চ্যাম্পিয়ন আওয়ার্ড
এমন অবস্থায় দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত বাবাকে সুস্থ করতে মরিয়া একমাত্র মেয়ে। বাবাকে শুধু সুস্থ করে তোলা নয়!পড়াশোনার করে চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সংসারের হাল ধরেছে ছোট্ট খুদে সুমিত্রা। বর্তমানে বাবার পেশাকেই হাতিয়ার করে এগিয়ে চলেছে সে। স্কুলে পড়াশোনার ফাঁকে পাড়ায় পাড়ায় কিংবা বাজারে বেরিয়ে পড়ে মশলা মুড়ি আর ঘটি গরম বিক্রি করার জন্য। এক জায়গা থেকে অপর জায়গা,হাড়ভাঙা খাটুনি করতে হয় সপ্তম শ্রেণীর এই ছাত্রীর। মাঝে মধ্যে মা সুচিত্রাও সহযোগিতা করেন মেয়েকে। তার আশা বাবাকে একদিন সুস্থ করে তুলতে পারবে সে।
আরও পড়ুন: প্রকৃতির ডাকে যাচ্ছিলেন জঙ্গলের দিকে, তখনই দেখেন ‘উনি’! বাঘের ভয়ে সব ছেড়ে দৌড় বাসিন্দার
সুমিত্রা জানিয়েছে, ‘মশলা মুড়ি বিক্রি করে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় হয়। সংসার খরচ,পড়াশোনা খরচ চালিয়ে বাবার ওষুধ কিনতে হয়। কোন কোন মাসে ওষুধ কেনা সম্ভব হয় না।যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তাহলে হয়তো বাবাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তোলা সম্ভব হতো।সুমিত্রা আর জানিয়েছে, মশলা মুড়ি বিক্রির পাশাপাশি পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। শুধু চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নয়,গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষরা যাতে চিকিৎসা পরিষেবা পায় সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে।’
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন“
সুমিত্রার মা সুচিত্রা শিকারী জানিয়েছেন, স্বামী দুবছরেরও অধিক সময় অসুস্থ।কিছুই করতে পারে না। মেয়ের কাঁধে সংসারের জোয়াল।নুন আনতে পান্তা ফুরায়,আগামী দিনে পড়াশোনা করে মেয়ে একজন সফল চিকিৎসক হতে চায়!দরিদ্র মানুষ কে সেবা করতে চায়। কিন্তু কি ভাবে সম্ভব অন্যদিকে অসুস্থ বিজয় অপলক দৃষ্টিতে চাতকের মতো মেয়ের উপার্জনের দিকে তাকিয়ে। সুস্থ হয়ে বাঁচার আশায় অধীর আগ্রহে প্রহর গুণছেন। এলাকার মানুষের দাবী, ‘সমস্ত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সুমিত্রা একদিন সফল হবেই। প্রতিভাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। এটা তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
সুমন সাহা