তিনি ‘ভবঘুরে’ কিন্তু হয়তো আমাদের তথাকথিত সুস্থ, দায়িত্ববান মানুষদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। যেখানে আমরা নিজের বাড়ি ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলেও অনেক সময় চিন্তা করি না আমাদের আশেপাশের রাস্তাঘাটের কথা। সেখানেই এই মানুষটির কাজ ভাবিয়ে তুলবে আপনাকেও। রাস্তা সে তো পৌরসভার সাফাইকর্মীরা পরিষ্কার করবেন, এই ভেবে এড়িয়ে যাই অনেকেই। কিন্তু সত্যিই কি কোন দায় নেই আমাদের? আমাদের বাড়ি ঘর পরিষ্কার রাখার যেমন আমাদের দায়িত্ব তেমনি আমাদের আশেপাশে পরিবেশকে সুস্থ রাখার দায়িত্বও কি নয় আমাদের?
advertisement
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সবুজে মোড়া গোলাপবাগ মোড় থেকে বিধানচন্দ্রের মূর্তি পর্যন্ত রাস্তাটি অনেকেরই প্রিয়। সে যেন এক মনোরম পরিবেশ। অনেকেই সময় কাটাতে যান সেখানে আবার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও এটি, অনেকেই নিজের প্রয়োজনের নিত্যদিন যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু মাথা তুলে চললে সবুজ দেখে মন ভাল হয়ে যাওয়া রাস্তাটির দিকে তাকালেই নোংরা, আবর্জনা। আর সেই আবর্জনা দেখেও শুধুমাত্র প্রশাসনকে দায়ী করে এড়িয়ে যাই আমরা। এখানেই হয়তো জিতে যান ওই ‘ভবঘুরে’ করে মানুষটি। তিনি যেন তার নিজের বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন জায়গাটিকে। একটু নোংরা আবর্জনার থাকলেই তা সাফ করে দিচ্ছেন। ভোল বদলে দিচ্ছেন রাস্তার।
সকাল থেকে বিকেল ছোট একটা ঝাঁটা অথবা একটি বস্তা নিয়ে ফুটপাত থেকে পিচ রাস্তা পরিষ্কার করে চলেছেন। ব্যস্ত তিনি রাস্তা পরিষ্কার করতে। কিন্তু মুখে যেন কুলুপ আঁটা। ডাকলে প্রথমে সারা দিলেও তার পরেই আবার শুরু করে দিচ্ছেন কাজ। কেউ কিছু খাবার দিলে নিচ্ছেন। কী তাঁর পরিচয়, কোথা থেকে এসেছেন জিজ্ঞাসা করলেই আবার শুধু নিস্তব্ধতা। স্থানীয়রা বলছেন, এই রাস্তাটি আগে খুবই নোংরা থাকত কিন্তু এখন অনেকটাই পরিষ্কার । এই তো কাজ পৌরসভার করার কথা কিন্তু করছেন এই ‘ভবঘুরে’ মানুষটি।
আরও পড়ুনঃ IND Vs ENG: কে থাকল দলে আর কে পড়ল বাদ? ওভালে ভারতের একাদশে কারা? বড় আপডেট
তাঁর নীরব কর্ম আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কীভাবে ছোট একটি পদক্ষেপও সমাজে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তিনি শুধু রাস্তা পরিষ্কারই করছে না, বরং আমাদের প্রত্যেকের অন্তরে এক গভীর প্রশ্ন জাগিয়ে তুলছেন, নিজেদের পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব নিয়ে। আমরা কি শুধুই প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকব, নাকি নিজেদের চারপাশকে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নেব আমরাও।
সায়নী সরকার





