শ্রীরামপুর চাতরা কালি বাবুর শ্মশানের ঠিক বিপরীতে রয়েছে একটি চায়ের দোকান। দোকানের বয়স আনুমানিক ৩০০ থেকে ৩৫০ বছর। প্রাচীন কড়িবরগার ছাদ দেওয়া সেই দোকান। এক সময় সেটি বাজারের দোকান হিসেবে ব্যবহার হল দীর্ঘ ৮০-৯০ বছর ধরে ওই দোকানটি ব্যবহার হচ্ছে চায়ের দোকান হিসেবে।
advertisement
কয়লার উনুনের চায়ের দোকানটিকে দেখলেই মনে হবে, আধুনিকতা ছেড়ে হঠাৎ করে কয়েক প্রজন্ম পিছনে চলে এসেছে মানুষজন। ঘটনাক্রমে চায়ের দোকানের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কার্যকলাপ ও কয়েক প্রজন্ম পিছনের মানুষদের মতন। কারণ দোকানে দোকানদার ছাড়াই চলে চায়ের বিক্রি। সন্ধ্যেবেলা চায়ের দোকানে আড্ডা এসে খোদ বিক্রেতারাই চা বানিয়ে নিজেরাই খেয়ে নেন। তবে চায়ের যা নির্ধারিত মূল্য হয় তা কিন্তু রেখে দিয়ে যান তারা ক্যাশ বক্স এর মধ্যে।
চায়ের দোকানের নির্দিষ্ট কোন বিক্রেতা নেই। আসলে পুরো চায়ের দোকানটা চলে মানুষের ভালোবাসা দিয়ে। কারণ চায়ের দোকান কে এখানকার ক্রেতারা দোকান চায়ের দোকান হিসেবে নয় বরঞ্চ এক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করেন। চায়ের দোকানের এক মালিক আছেন তবে তিনিও চাকুরীজীবি। সকালবেলা দোকান খোলেন অল্প কিছু সময় তিনি দোকানে থাকেন, তারপর অফিস চলে গেলে দোকান চালান অন্যান্য ক্রেতারা। নিজেরাই এসে চা তৈরি করেন সেই চান নিজেরাই পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: খুলে যাবে ভাগ্যের বন্ধ দুয়ার, ৮ রাশির বৃহস্পতি তুঙ্গে! ৯৭ দিন ধরে চলবে টাকার বৃষ্টি
এই বিষয়ে একজন সেইসময়ের বিক্রেতা বলেন, আসলে তিনি চা বিক্রেতা নন তিনি ওই দোকানে চা খেতে আসেন প্রতিদিন। সন্ধ্যেবেলার এই সময়টা করে সেভাবে চা তৈরি করার কেউ থাকে না। সেই কারণে চা করার দায়িত্ব তিনি নিজেই তুলে নেন। অবসরপ্রাপ্ত জীবনে অনেকেই সন্ধ্যেবেলা আসেন সেখানে আড্ডা দিতে গল্প করতে। কখনও তিনি চা করেন কখনও বা তার বাকি সঙ্গীরা। এভাবেই চলে চায়ের দোকান। কারণ এভাবে যদি না চলতো তাহলে এতদিনে হয়তো সেই দোকান বন্ধ হয়ে যেত লোকের অভাবে।
এ বিষয়ে একজন ক্রেতা যিনি চা খেতে এসেছিলেন তিনি বলেন, কম করে ৪০ বছর ধরে তিনি সেই দোকানে চা খাচ্ছেন। এখানে যারা সন্ধ্যে বেলা বা দিনের বেলায় আড্ডা জমান তারা সকলেই স্থানীয়। পাড়ায় একটি চায়ের দোকান যাকে ঘিরে মানুষের মধ্যে এক অন্য ধরনের ভালবাসা রয়েছে। তারা সেখানে বসে শুধু চা খান এমনটাই নয়, তারা সে চায়ের দোকান কেউ যথেষ্ট ভালবাসেন। সেই ভালবাসা দিয়েই প্রায় ৯০ বছর ধরে চলে আসছে নতুনের মধ্যে টুকরো পুরাতন শ্রীরামপুর চাতারার চায়ের এই দোকান।
রাহী হালদার