ময়নাতদন্ত করার সময় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই মৃতদেহ শামসুল হুদা শেখের নয়, এই মৃতদেহ বিহারের বাসিন্দা রাজা শাহানির। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে কাকদ্বীপ পুলিশ মর্গের ডোমের কাছ থেকে। মরদেহর থেকে উদ্ধার হয় একটি রক্তমাখা আধার কার্ড। আধার কার্ডটি থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় এই মরদেহ বিহারের বাসিন্দা রাজা শাহানির। এরপর পরিবারের লোকজন প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মরদেহ পুনরায় ওড়িশা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া দু’লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পুনরায় ফেরত পাঠায় ওই পরিবার।
advertisement
আরও পড়ুন: বাহানাগায় রেল দুর্ঘটনার পর রোলিং স্টকের রক্ষণে জোর উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের পাঁচ সদস্য সংসারের হাল ধরার জন্য ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। এটি তাঁদের প্রথমবার যাত্রা নয়। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজমিস্ত্রির কাজের সঙ্গে যুক্ত। ভিন রাজ্যে কাজ করার জন্য কেরলে যান। অন্যান্য বারের মতো দু’জুন অভিশপ্ত করমণ্ডলে চেপে কেরালে কাজের উদ্দেশে করেছিলেন। ওই দিন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের। আব্দুল মজিদ শেখ (৪৭) ও গিয়াস উদ্দিন শেখের (৩৪)। মৃতদেহ শনাক্ত করে বাড়িতে ফেরানো হলেও এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে তিনজন।
বৃহস্পতিবার যে মরদেহ এসেছে সেই মরদেহ তাঁদের পরিবারের সদস্যের নয়, এমন দাবি করায় স্বাভাবিক ভাবে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। মানবিকতার পরিচয় দিয়ে মরদেহ পুনরায় ওড়িশা সরকারের হাতে পৌঁছে দেওয়ার সব রকম চেষ্টা ও সাহায্য করে শেখ পরিবার। পরিবারের সদস্যদের কথায়, এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি থাকা উচিত সকলের। যাঁরা পরিবারের নিজেদেরকে হারিয়েছেন, তাঁরা প্রয়াতদের মুখ শেষবারের মতো দেখুক। বিগত সাত দিন কেটে যাওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত মৃতদেহ কেন পাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছে ওই পরিবার। জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় বাড়ির লোককে কবে পাবে, সেই আশায় এখন দিন গুনছে পরিবারের লোকজন।
সুমন সাহা