ঠিক কী লেখা ছিল সেখানে, যা নিয়ে এত হইচই, খুদের হস্তাক্ষরে পরিষ্কার লেখা রয়েছে বাবা 'বা মা আমার কেউ ভালবাসে না'। এই লেখা পড়ার পর মন ভার স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষকা থেকে শুরু করে সকলেরই। সম্প্রতি মিড-ডে মিল প্রকল্প ঘুরে দেখতে রাজ্যে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় দল আসার আগে রাজ্যের স্কুলগুলির কাছে কিছু নির্দেশিকা আসে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়, পড়ুয়াদের নিজস্ব কথা জানানোর জন্য স্কুলে একটি ড্রপবক্স রাখতে হবে। সেই নির্দেশিকা মেনে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে রাখা হয় ড্রপবক্স ‘ মনের কথা’।
advertisement
এই বক্সে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিজস্ব কথা লিখে জমা দিতে বলা হয়। শিক্ষকদের কথা মতো প্রায় ২০ জন পড়ুয়া তাদের মনের কথা লিখে ওই ড্রপবক্সে ফেলে। আর ড্রপবক্স খুলতেই পড়ুয়াদের মনের কথা পড়ে শিক্ষকরা রীতিমতো স্তম্ভিত। ছেঁড়া কাগজের টুকরোয় আঁকাবাকা হরফে ফুটে উঠেছে তাদের মনের কথা।
আরও পড়ুন : পরিবেশ বাঁচাতে পাহাড় থেকে পায়ে হেঁটে সমতলকে জুড়লেন মানসী
তারা লিখেছে-‘ বাবা-মা কেউ আমাকে ভালবাসে না।’ ‘ আমি নাচ শিখতে চাই, কিন্তু আমাকে নাচের স্কুলে ভর্তি করা হচ্ছে না।’ ‘ বাবাকে একটি পেন্সিলবক্স কিনে দিতে বলেছিলাম, কিন্তু বাবা গরিব বলে কিনে দিতে পারেনি।’ প্রতিটি কথায় উঠে এসেছে হতাশার ছাপ। এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিলকুমার সামন্ত জানিয়েছেন " এই মনের কথাগুলি এত বেদনার ও কষ্টের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এগুলি সমাধানের চেষ্টাও করব। কথাগুলি হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।"
আরও পড়ুন : দাদার মৃত্যুতে তাঁর অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বৌদিকে বিয়ে দেওরের
এ নিয়ে বিশিষ্ট মনোবিদ দোলা মজুমদার দাস জানিয়েছেন " আজকালকার দিনে শিশুরা ভালবাসাটাকে বেশি ভালবাসে। এটা হতে পারে যে প্রান্তিক এলাকায় শিশুদের অভিভাবকরা উপার্জন করতে গিয়ে অধিকাংশ সময় শিশুদের সময় দিতে পারছেন না, তারা স্কুলে এসে শিক্ষকদের সান্নিধ্যে এসে তাদের বেশি ভালবাসছে। শিক্ষকদের কাছে তাদের মনের কথা বলতে পারছে। যেটি সত্যিই ভাববার বিষয়।"





