এই সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে বনবিবির মেলা বসে। সুন্দরবনবাসী বনবিবিকে নিজেদের অভিভাবক মনে করেন। সেই কথা স্মরণে রেখেই বুধবার শুরু হয় এই বছরের বনবিবি পুজো। দক্ষিণ ২৪পরগনার জয়নগরের রাম রুদ্রপুরে শুরু হয় অতি প্রাচীন বনবিবির মেলা। গত দু'বছর করোনার কারণে মেলা বন্ধ ছিল। এই বছর সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় আবারও শুরু হল এই বনবিবির মেলা। বেশ কয়েকদিন ধরে চলবে এই মেলা। রাম রুদ্রপুরের এই বনবিবি-র মেলা বহু প্রাচীন। বাংলার ১৩৬১ সালে এখানে প্রথম শুরু হয় বনবিবির পুজো। তারপর থেকে রামরুদ্রপুরের বাসিন্দারা বংশ-পরম্পরায় এই পুজো করে আসছেন। এই পুজো উপলক্ষে রাম রুদ্রপুর এলাকায় মেলা উপলক্ষে বহু মানুষের সমাগম হয়। বিভিন্ন বিচিত্রা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন গ্রামের বাসিন্দারা।
advertisement
আরও পড়ুন: গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় কান কেটে নিল যুবকের!
সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাতে মাঘ মাসের এক তারিখ থেকে বনবিবির মেলা শুরু হয়। মেলা উপলক্ষে বহু মানুষের সমাগম হয় ওই এলাকায়। এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ হল বিভিন্ন ধরনের কাঠের তৈরি জিনিসপত্র। বহু দোকান বসে মেলায়। যাত্রা, পুতুল নাচ, বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সব মিলিয়ে বনবিবির মেলাকে কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে ওঠে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা।
বনবিবি ও দক্ষিণ রায়, সুন্দরবনের এই দুই রক্ষাকর্তার মধ্যে দিয়ে হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা প্রস্ফুটিত হয়। নামে বনবিবি হলেও তাঁর পুজোয় ভিড় করে আসছেন সুন্দরবনের হিন্দুরাও। এখানে বিভেদের বিষবাষ্প বিন্দুমাত্র ছায়া ফেলতে পারে না। সুন্দরবনের বহু হতদরিদ্র মানুষ আজও জঙ্গলে গিয়ে মধু সংগ্রহ করে, নদী থেকে মিন ধরে কোনরকমে টিকে আছেন। এই ঝুঁকিবহুল কাজে যাওয়ার আগে তাঁরা সকলেই বনবিবি ও দক্ষিণ রায়কে নিজেদের রক্ষা কর্তা হিসেবে স্মরণ করে বাড়ির বাইরে পা ফেলেন।
সুমন সাহা