ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় এই কেল্লা পর্তুগীজ জলদস্যুরা বাণিজ্যের নাম করে নদী পথে বাণিজ্য জাহাজে লুঠপাট চালানোর জন্য ব্যবহার করত৷ সেসময় হুগলী নদী লাগোয়া হাজিপুরের পূর্ব তীরের খাঁড়িতে ভাটার সময় সকালে ও বিকেল সূর্য কিরণ প্রতিফলিত হয়ে ফুটে উঠত ধপধপে সাদা নুন৷ মাঝ নদী থেকে মনে হত উজ্জ্বল হীরক খন্ড৷ এই দৃশ্য দেখে পর্তুগীজ বণিকরা হাজিপুরকে ‘ডায়মন্ড ক্রীক’ নামে অভিহিত করেন৷ পর্তুগীজদের রাখা ডায়মন্ড ক্রীক নাম থেকেই পরে হাজিপুরের অধুনা নাম হয় ডায়মন্ড হারবার৷
advertisement
পর্তুগীজরা দেশ ছাড়ার পর কালের নিয়মে একই রকমভাবে জলপথে বানিজ্যের জন্য এদেশে আসে ইংরেজরা।এরপর হাজিপুরে ঘাটি গাড়ে ব্রিটিশরা৷ বানিজ্যের সুবিধার্থে সে সময় হুগলী নদীর তীরে পোতাশ্রয় বা বন্দর গড়ে তোলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি৷ একই সাথে নদী পথে নজরদারীর পাশাপাশি সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কয়েক বিঘা জমিতে তিনটি বিশাল আয়তনের বহুতল দূর্গকে নিয়ে গড়ে ওঠে কেল্লা৷ কেল্লার নিরাপত্তার জন্য তিনটি কামানও বসানো হয়েছিল৷
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রকৃতির নিয়মে ইতিহাসের স্মৃতি বিজড়িত চুন-সুড়কি ও ইঁটের তৈরী কেল্লার ক্ষয় হতে শুরু করে৷ সঠিক নজরদারি ও সংরক্ষণের অভাবে দুস্কৃতিরা অবাধে লুঠ করে নিয়ে যায় কেল্লার ইঁট, কাঠ, কামানের যন্ত্রাংশ সহ বিভিন্ন সামগ্রি৷ গত কয়েক বছর ধরে হুগলী নদীর ভাঙন ব্যাপক আকার নেয়৷ বর্তমানে কেল্লার অবশিষ্ট অংশ বলতে কেবলমাত্র কয়েকটি ভাঙা স্তম্ভ অবশিষ্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন- বিহারে ফের 'লালু ম্যাজিক'! 'লালু বিন বিহার চালু' হতে পারে না, ইঙ্গিত লালু কন্যার
আরও পড়ুন- উদ্ধবের পরিণতি থেকে শিক্ষা, মহারাষ্ট্র কাণ্ড দেখেই বিজেপি-তে বিশ্বাসভঙ্গ নীতীশের
কয়েক বছর আগে কেল্লার আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে পর্যটক টানতে পাশেই একটি পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয় ডায়মন্ড হারবার পুরসভার পক্ষ থেকে৷ বছরের অন্যান্য সময় পর্যটকদের কাছ থেকে মাথাপিছু ১০ টাকা করে নেওয়া হলেও, ১৫ অগাস্ট এই পিকনিক স্পটে আসার জন্য কোনো অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া হয়না। এই কেল্লা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসলেও। তারা ভাঙা কেল্লাই দেখতে পান। এ নিয়ে ডায়মন্ডহারবার পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রণব দাস জানান এই কেল্লা রক্ষনাবেক্ষনের জন্য বারবার কেন্দ্র সরকারের কাছে বলে লাভ হয়নি। ঐতিহাসিক কেল্লাটি নদীগর্ভে প্রায় বিলীন হয়ে যেতে বসেছে। আমরা পর্যটকদের জন্য একটি নকল কেল্লা ও কামান তৈরী করা যায় কিনা সে দিকটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
নবাব মল্লিক





