অনুব্রত ও সুকন্যা ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল সিবিআই আধিকারিকেরা। বুধবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অনুব্রত ও সুকন্যা ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎ বরণ গায়েনকে আটক করে সিবিআই আধিকারিকেরা। কে এই বিদ্যুৎ বরণ গায়েন? দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার ভবানী মারি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বিদ্যুৎ বরণ গায়েন। বিদ্যুৎ বরণ গায়নের বাবা পঞ্চানন গায়েন বোলপুরের স্বাস্থ্য দফতরের চাকরি করতেন। বাবার চাকরির সূত্রের দৌলতে বিদ্যুতের বোলপুরে যাতায়াত লেগেই থাকত।
advertisement
আরও পড়ুন: হুমকি চিঠি নিয়ে বিচারকের কাছেই মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল, তোলপাড় পড়ল বাংলায়
কয়েক বছর আগে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের দাদা তপন গায়েন। ২৫ বছর আগে চাকরি সূত্রে বীরভূমে সপরিবারে চলে গিয়েছিল বিদ্যুৎ বরণ গায়েন। বিদ্যুতের বরাবরই নিজের জন্ম ভিটের উপর টান রয়ে গিয়েছিল বীরভূমে থাকলেও নিজের জয়নগরের বাড়িটিকে নতুনভাবে সাজিয়েছিলেন। গত ছয় মাস আগেই সপরিবারে জয়নগরে এসেছিল বিদ্যুৎ বরণ গায়েন।
রাজ্যে তৃণমূল আসার আগে পর্যন্ত এই বিদ্যুৎ বরণ গায়েন বোলপুর পুরসভায় একজন অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ২০১১ সালের পর সেখানে তিনি স্থায়ী চাকরি পান। তৃণমূল সরকারের আসার পর এই বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন সময় তাঁকে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। তাকে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে বসেই দেখা গিয়েছে বোলপুরের তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে। তিনি যে অনুব্রত মণ্ডলের খুব কাছের মানুষ তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা উৎসাহ ভাতা, চমকে দিল নবান্ন! আশাকর্মীদের জন্য বিরাট ঘোষণা
অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর যে সমস্ত সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে সেই সকল সংস্থার প্রথম ডিরেক্টর হিসাবে নাম রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। উল্লেখযোগ্য, এই সকল সংস্থার দ্বিতীয় ডিরেক্টরের নাম হিসেবে রয়েছে পুরসভার এই কর্মী বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের। পাশাপাশি প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে তার নামে বলেও জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত। একজন সাধারণ পুরসভার কর্মী হয়ে কীভাবে এত প্রতিপত্তির মালিক হলেন বিদ্যুৎ বরণ গায়েন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তবে পুরো বিষয়টি এখন ধোঁয়াশার মধ্যে।
বোলপুর পুরসভার অন্তর্গত ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুরে এই বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের নামে দুটি বাড়ি রয়েছে। রয়েছে একটু জায়গাও। পাশাপাশি আরও জমিজমা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছে, দীর্ঘদিন আগেই বিদ্যুৎ চাকরি সূত্রে বীরভূমে চলে গিয়েছিল। ছয় মাস আগে গ্রামেরই একটি পুজো অনুষ্ঠানে এসেছিল বিদ্যুৎ শরীর খারাপ থাকার কারণে কারোর সঙ্গে কথা বলেনি। মন্দিরে পুজো দিয়ে চলে গিয়েছিল বিদ্যুৎ। জয়নগরের বিদ্যুৎ কীভাবে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে বিন্দু বিসর্গ কেউ জানে না। বিদ্যুৎ কে আটক করার পর সিবিআই আধিকারিকারা কি কি নতুন নতুন তথ্য উন্মোচন করবে সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।
সুমন সাহা