সেই পদক্ষেপের অংশ হিসাবে গত ২০২২- ২০২৩ বর্ষে বনদফতরের পক্ষ থেকে সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকায় মোট ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা রোপন করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা না পূরণ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ।
আরও পড়ুন ঃ দু’মাসের মধ্যে বারুইপুর স্টেশন সংলগ্ন কলপুকুরকে আগের চেহারায় ফেরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
advertisement
মূলত সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকার প্রান্তিক মানুষেরা এই ১০০দিনের কাজের মাধ্যমে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, বন্ধ হয়ে পড়ে সেই কাজ। এর ফলে বন দফতর এর বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। ১০০ দিনের কাজের টাকা না পেয়ে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষেরা।
এবার সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের স্বনির্ভর করতে এগিয়ে এলো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বনদফতর ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আবারও পুনরায় সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ম্যানগ্রোভ গাছের চারা লাগানোর কাজ। এর ফলে স্বনির্ভর হয়ে উঠছে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষেরা।
আরও পড়ুন ঃ স্বাধীনতার পর প্রথম বামপন্থীদের হাতছাড়া রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েত
গো ধার্মিক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রামের মহিলারা পুনরায় সেই ১০০ দিনের কাজ করার সুযোগ ফিরে পেল। এই বিষয় গো ধার্মিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ডিরেক্টর দীপঙ্কর মন্ডল তিনি জানান, “আমরা জানি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে অপরিসীম। বিভিন্ন কারণে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হওয়াতে বনদফতরের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়।”
তারপর তিনি বলেন, “গ্রামের মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রামের মানুষদের এই ম্যানগ্রোভ চারা রোপনের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের আবার পুনরায় স্বনির্ভর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আগামী দিনে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকার মানুষদের এই ম্যানগ্রোভ চারা রোপনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হবে।”
আরও পড়ুন ঃ গোসাবায় বিদায়ী প্রধানের হুমকি পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীকে, থানায় অভিযোগ দায়ের
এই বিষয় এক গ্রামবাসী অর্চনা রাই বলেন, “১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সংসার চালানো খুব কষ্ট সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল।” সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকা বহু মানুষ এই ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়াও বনদফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা গ্রামবাসীদের ব্যবহার করা হতো। ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ থাকার কারণে কাজ হারিয়েছে অনেকে।
আবারো নতুন করে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পাশে দাঁড়াতে আর্থিক অনটন কাটিয়ে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষেরা। এই বিষয়ে বনদফতরের আধিকারিক মিলন কান্তি মন্ডল (ডি এফ ও) তিনি জানান, “গত বছর সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলিতে প্রায় পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বনদফতর। সেই মতনই ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা গ্রামবাসীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কাজ শুরু করা হয়েছিল।”
আরও পড়ুন ঃ বেহালার ঘটনা থেকে শিক্ষা! জেলা জুড়ে সরকারি স্কুলের সামনে যানজট নিয়ন্ত্রণ
তারপর তিনি বলেন, “কিন্তু ১০০ দিনের কাজ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় এর ফলে বনদফতরের একাধিক প্রকল্পের কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে। বনদফতর ও গো ধার্মিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আবারো ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে সুন্দরবন এলাকা জুড়ে। এবছর প্রায় এক কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বনদফতর। সুন্দরবনকে রক্ষা করতে যেভাবে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভূমিকা পালন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
সুমন সাহা