ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম নির্মল গোপ। পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে আরও দুজনের বিরুদ্ধে। তারা হল রবীন গোপ ও ভারতী সিংহ। ভারতী সিংহ প্রাক্তণ ফাসিদেওয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ধৃতকে শনিবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ি মহকুমার অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের লিম্বুটারই এলাকার বাসিন্দা রেশমিতা লাকড়া তির্কি। কয়েক বছর আগে মহিলার স্বামী মারা গেলে স্থানীয় চা বাগান ও দিনমজুরির কাজ করে দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার চালান ওই আদিবাসী মহিলা।
advertisement
জানা গিয়েছে, মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকারই বাসিন্দা নির্মল গোপ ওই মহিলাকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে উত্যক্ত করত। সম্প্রতি গত মাসেও অভিযুক্ত নির্মল গোপ একই ভাবে ওই মহিলাকে উত্যক্ত করে। এরপরই ওই মহিলা ফাঁসিদেওয়া থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কোন পদক্ষেপ করেনি পুলিশ বলে অভিযোগ। এদিকে, অভিযোগের পরই তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে চলছিল ওই ব্যক্তি।এরপরই ২০ আগস্ট এলাকার দুই নেতা রবীন গোপ ও ভারতী সিংহ গোপনে সালিশি সভা ডাকে। রবীন গোপের বাড়িতে ওই সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সালিশি সভায় মহিলাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে রীতিমত হুমকির পাশাপাশি বিভিন্নরকমভাবে অপমানিত করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই থেমে থাকেনি। ওই সালিশি সভায় সবার সামনে বিষের বোতল মহিলার হাতে তুলে দিয়ে তাকে বিষ খেয়ে মরে যাওয়ার জন্য বলে নির্মল গোপ। ওই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে ফিরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় মহিলা।
আরও পড়ুন: SSKM-এ বসেই ডাক্তাররা প্রাণ বাঁচালেন আসানসোলের রোগীর! টেলিমেডিসিনের সাফল্য!
বিষ খাওয়ার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ১৪ দিন চিকিৎসা চলার পর সেই মহিলার শুক্রবার রাতে মহিলার মৃত্যু হয়। মৃতার বোন সবিতা তির্কি বলেন, "ভারতী সিংহ সহ সভায় উপস্থিতিতে সকলকেই গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশও কোন পদক্ষেপ করেনি। যতক্ষণ না পর্যন্ত পুলিশ সবাইকে গ্রেফতার না করছে ততক্ষণ আমরা শেষকৃত্য করব না।" ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নামে নতুন করে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে ফাঁসিদেওয়া থানায়। তবে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নির্মল গোপকে গ্রেফতার করা হলেও এবং বাকিদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। ফাসিঁদেওয়া ব্লকের মহকুমা পরিষদের সদস্য আইনুল হক বলেন, "আইন আইনে পথে চলবে৷ এরকম কিছু ঘটে থাকলে দোষীদের শাস্তি পাওয়া উচিৎ !"
অনির্বাণ রায়