চারিদিকে জঙ্গল, আর তার মাঝখানে রয়েছে পানিয়া ফাফড়ি কামাতপাড়া এলাকা। শিলিগুড়ি শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট। আর সেই ফরেস্ট লাগোয়া রেঞ্জার অফিস। সেখান থেকে আরও কয়েক কিলোমিটার এগোলেই দেখা যাবে এই গ্রাম। যেখানে শহুরে কোনও অভ্যাসই ঢুকতে পারেনি। খড়ের ছাউনি, মাটির ঘড়, মেঠো পথ। সন্ধ্যে হলে লাইট নয়, জ্বলে বাতি। তবে জঙ্গল পার্শ্ববর্তী এলাকা হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেখানে হাতির আনাগোনা হয়। হাতির হানায় মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: কয়েক পেগ রাম খেতেই লেপার্ডের থাপ্পড় এসে পড়ল গালে! ফুডকাকেই খাবার বানানোর চেষ্টা!
গত প্রায় ২০ বছর আগের কথা। এক কিশোরিকে পায়ে পিষে মেরে ফেলেছিল এক দাঁতাল হাতি। আর সবটাই ঘটেছিল গ্রামবাসীদের চোখের সামনে। গ্রামের ছোট্ট মেয়েটিকে এভাবে পদপৃষ্ট হয়ে মরতে দেখে ভয় ঢুকে গিয়েছিল গ্রামবাসীদের মনে। এছাড়া মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ঢুকে ঘড়বাড়ি নষ্ট করে যেত, ঘরে থাকা সামগ্রীও খেয়ে চলে যেত হাতির দল। মূলত হাতির উৎপাতে অতিষ্ট হয়েই একে একে গ্রাম ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন:
তবে এখনও সেই গ্রামে যদি ঢোকেন, ফিরে আসতে চাইবেন না আপনি। হাতির হাত থেকে বাঁচতে তৈরি করা হয়েছে এই গণেশ মন্দির। যদিও মন্দিরে গণেশের কোনও মূর্তি নেই, পুজো করা হয় বেদীতে। তবে সারাবছর বেদীতে পুজো হলেও, বাৎসরিক পুজোর সময় গণেশ মূর্তি দিয়েই হয় পুজো। কিন্তু পরেরদিন সকালে দেখা যায় হাতি নিজেই এসে মূর্তি নদীর ধারে রেখে এসেছেন। এছাড়াও গ্রামবাসীদের কথায়, মন্দিরের দেবতা অনেক জাগ্রত। তার কথা শোনেন হাতির পাল।
শিলিগুড়ি খবর | Siliguri News
আরও পড়ুন:
ওই মন্দির তৈরির পর থেকে নাকি হাতির উৎপাত তেমন নেই। এমনকি মন্দিরে এসে যারাই ধূপকাঠি, মোমবাতি জ্বালিয়ে পুজো দিয়ে যান, তাদের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। স্থানীয় হরিচন্দ্র রায় বলেন, ” হাতির হাত থেকে বাঁচতে আমাদের গণেশ ভরসা। জাগ্রত এই মন্দিরে অধিষ্ঠাত্রী দেবতা গণেশ ঠাকুরই নাকি দেখভাল করেন আমাদের গ্রামের। এখনো মাঝে মাঝেই হাতি আসে তবে মন্দির প্রতিষ্ঠার পর আমাদের কোনো ক্ষতি হয়নি ।”
অনির্বাণ রায়