আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় শিলিগুড়ি, বিপদ বাড়িয়েছে পাহাড়
কালিম্পং শহর থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত পেডং ব্লকের টারি গ্রাম। সেখানকারই নামে এই উৎসবের নামকরণ। বহু যুগ আগে ওই গ্রামে শ্রাবণ মাসে পাহাড়ের ধাপে ধাপে ধানের চারা রোপনকে ঘিরে এই উৎসবের সূচনা হয়। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র দার্জিলিং পার্বত্য এলাকায়। মূলত গোর্খা জনজাতির মানুষ এই সময়টায় পাহাড়ের ধাপে ধানের চারা রোপন করে। সেই উপলক্ষে গ্রামের সকলে সমবেত হয়ে দই, চিড়ে খেয়ে গোর্খা জাতির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নাচে-গানে মেতে ওঠেন। ব্যাপক আনন্দের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাহাড়ের ধাপে ধাপে ধান রোপন। প্রথমে শ্রদ্ধার সঙ্গে ভূমিকে পুজো করেন গ্রামবাসীরা। এদিন সেজেগুজে সব গ্রামবাসী একসঙ্গে ধানের চারা রোপন করেন। সে এক অনবদ্য দৃশ্য।
advertisement
গত কয়েক দশক ধরে দার্জিলিং পার্বত্য এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এই টারি উৎসব। গোর্খাদের এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য উদ্যোগী হয়েছে গোর্খা গৌরব সংস্থান। তাঁদের এবং টারি গ্রাম সুধার সমিতির যৌথ উদ্যোগে শনিবার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় টারি গ্রামে। এই অনুষ্ঠানে আট থেকে আশি গোর্খা জনজাতির প্রচুর মানুষ অংশ নেয়। গত কয়েক দশকের রীতি মেনেই দই-চিড়ে খেয়ে ধান রোপণের মাধ্যমে দিনটিকে উদযাপন করেন। নাচ-গানের পাশাপাশি কাদাখেলায় মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা! গোর্খা গৌরব সংগঠনের সভাপতি নরেন্দ্র তামাং বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা কীভাবে চাষ করত সেটা এই উৎসবের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়। নতুন প্রজন্ম এসব ভুলে যাচ্ছে। এটা আমাদের পরম্পরা। এটা যাতে বিলুপ্ত না হয় সেজন্য সংরক্ষন করার দায়িত্ব আমাদের। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখছি।
অনির্বাণ রায়