সেই সুবাদেই পুজোর ক’টা দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে না বললেই চলে। মন খারাপকে সঙ্গী করে লক্ষীলাভের আশায় পুজোর ক’টা দিন লাগাতার ঢাকের বোল তুলতে ব্যস্ত থাকেন।
পুজোর শেষে একগাল হাসি নিয়ে বাড়ি ফেরার পালা। এঁদের পরিচয় ‘ঢাকি’। মালদা জেলার বাসিন্দা সনাতন রবি দাস দশ বছর বয়স থেকেই বাবার হাত ধরে শিলিগুড়িতে আসেন। ঢাকি সনাতন রবি দাস পেশায় একজন শিক্ষক। স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তবে পুজোর ক’টা দিন তিনি ঢাক কাঁধে বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েন তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন: আফ্রিকার ভুভুজেলা তৈরি হচ্ছে শিলিগুড়িতে! এই বাঁশির সুরে মজেছে বাঙালি
পুজোর ক’টা দিন পরিবার ছেড়ে শিলিগুড়ির বিভিন্ন মণ্ডপে, মন্দিরে দিন কাটে তাঁর। ঢাকের তালে সকলকে নাচিয়ে শেষে জোটে কিছু টাকা। এভাবেই চলছে তাঁর জীবন। কিন্তু হাইটেক যুগে তাদের কদরও অনেকটা কমে আসছে। যদিও অসম লাড়াই চালিয়ে যেতে পিছু-পা নন ঢাকিরা।
এবছর দূর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়িতে বহু ঢাকি পাড়ি জমিয়েছিলেন৷ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সনাতন এসেছিলেন শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন চত্বরে। পঞ্চমীর সকাল থেকে একে বায়না পেয়ে তিনি পাড়ি দেন কোনও বারোয়ারি পুজো মন্ডপ কিংবা মন্দিরে।
সেখানেই ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী শেষে দশমীতে মা’কে বিদায় জানিয়ে একাদশীতে এবার বাড়ি ফেরার পালা। সনাতনের সঙ্গে তাই সকলেই সকাল থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেন শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনে। সেখান থেকেই তাঁরা বাড়ির পথে রওনা হন একযোগে।
সনাতন রবি দাস বলেন, ‘খুব ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে ছোট বেলায় আসতাম ঘণ্টা বাজাতে। তারপর ঢাকে কাঠি। এখন নিজেই চলে আসি। বছরের অন্যান্য সময় স্কুলে বাচ্চাদের পড়ানোর কাজ চলে।’
অপর এক ঢাকি রিন্টু রবি দাস জানান, ‘পুজোর ক’টা দিন মন খারাপ ছিল। কিন্তু এখন মন ভাল। কারণ, এই ক’দিন ঢাক বাজিয়ে কিছুটা হলেও অর্থ উপার্জন হয়েছে। এখন আবার কালি পুজোর অপেক্ষা।”
অনির্বাণ রায়