শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি থানার কেটুগাবুরজোত এমন একটি গ্রাম, যেখানে ধীমালরাই বেশি সংখ্যায় রয়েছেন। এই ধীমালদের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। এখন অবশ্য কিছু কিছু লোক অফিসে চাকরি করেন। নকশালবাড়ির ওই কেটুগাবুরজোত গ্রামে তাঁদের সংখ্যা ৫৫০ জন। এখন তাঁদের মধ্যে কলেজ পাশ করা মানুষের সংখ্যা ৫ জন। আর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা মানুষের সংখ্যা ১২ জন। ধীমালদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে বহু কিছু হারিয়ে যেতে বসেছে। কেটুগাবুরজোত গ্রামের স্কুল শিক্ষক গর্জেন কুমার মল্লিক সেদিক থেকে ধীমাল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এক নতুন দিশা।
advertisement
আরও পড়ুন : কেদারনাথ মন্দিরের আদলে তৈরি শিবমন্দির আছে এই বাংলাতেই, মহাশিবরাত্রিতে জেনে নিন সেই দেবালয় কোথায়
১৯৮৩ সালে শিলিগুড়ি কলেজ থেকে বায়োসায়েন্স নিয়ে স্নাতক হন গর্জেনবাবু। এখন তিনি পানিঘাটা হাইস্কুলের জীববিজ্ঞানের শিক্ষক। শিক্ষা বিস্তার ছাড়াও তিনি ধীমাল সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে একটি দল গঠন করেছেন। ধীমাল জাতি অস্তিত্ব রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক তিনি। এখন তাঁরা কেন্দ্র সরকারের কাছে তাদের সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবি করছেন।
আরও পড়ুন : মহাশিবরাত্রির পুণ্যলগ্নে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ নদিয়ার মাজদিয়ার শিব নিবাসে পুণ্যার্থীদের ঢল
গর্জেনবাবু বলেন, “স্বাধীনতার আগেও আমরা ছিলাম তফসিলি উপজাতি। আর এখন আমরা ওবিসি। এটা কেন হবে?”এছাড়াও ধীমালদের বহু পুরনো অনেক বাদ্যযন্ত্র রয়েছে। যেমন তুনজাই, গুমনা, ঢোল, চুঙ্গা মের্দং, মর্চুংয়া। এসব বাদ্যযন্ত্র সাধারণত বাঁশ দিয়েই তৈরি। সেসবও হারিয়ে যেতে থাকায় গর্জেনবাবু বাঁচানোর কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন ছেলেমেয়েদের তিনি সেসব তৈরি ও বাজানোর কায়দাও শিখিয়ে চলেছেন। আবার নিজেও কিছু গান রচনা করে ধীমাল ভাষায় সুর দিয়েছেন।