হায়দ্রাবাদে নিজের ছেলের বাসভবনে শেষ কয়েক বছর ছিলেন প্রবীণ বাম নেতা। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের এক সদস্য বলেন, যেন আমাদের মাথার উপর ছাদ ভেঙে পড়ল। পরিবারের অভিভাবক চলে গেলেন।
advertisement
১৯৪২ সালের ১১ জুলাই পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার বেরোতে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন কমরেড বাসুদেব আচারিয়া। সেখানেই তাঁর লেখাপড়া ও বড় হয়ে ওঠা। তাঁর পরিবার তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুরুলিয়ার রেল শহর আদ্রার কাটারাঙ্গুনি এলাকায় থাকতেন। ছাত্র বয়সেই বাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। স্বাক্ষরতা অভিযানে পশ্চিমাঞ্চলে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য।
১৯৮০ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ পর্যন্ত বাঁকুড়ার সাংসদ ছিলেন। সেই বছরই তিনি তৃণমূল প্রার্থী , অভিনেত্রী মুনমুন সেনের কাছে হেরে যান। দীর্ঘদিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। সিটুর সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন তিনি। শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। নিজের গোটা জীবনে একের পর এক সংগ্রাম করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএমের ৭ বারের প্রাক্তন সংসদ তথা রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া।
দীর্ঘদিন রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন বাংলার বিভিন্ন রেল প্রকল্পের জন্য দরবার করতেন। বহু আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন নিজের রাজনৈতিক জীবনে। পুরুলিয়ার শিল্পায়ন ও রেল যোগাযোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রকের পরামর্শ কমিটির সদস্য ছিলেন কমরেড বাসুদেব আচারিয়া। ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি শিল্প মন্ত্রকের পরামর্শ কমিটির সদস্য ছিলেন।
জানা গিয়েছে , বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএমের ৭ বারের প্রাক্তন সাংসদ তথা রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান কমরেড বাসুদেব আচারিয়ার এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। তাঁর মধ্যে এক কন্যা বিদেশে থাকেন। তাঁদের সেকেন্দ্রাবাদে পৌঁছতে মঙ্গলবার হবে। তাই মঙ্গলবার দিনই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে প্রয়াত সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়ার।
শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়