১২ ফেব্রুয়ারি শনিবার কোলাঘাট ব্লকের দেনান গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রূপনারায়ণনদী তীরবর্তী পাড়ের রাস্তা ধ্বসে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। শুধু রাস্তায় নয় শেষ কয়েক বছরে রূপনারায়ণ নদের কোলাঘাটের দিকের ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। রূপনারায়ণ নদে ভাঙ্গন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে কোলাঘাট ব্লকের বিভিন্ন বিভিন্ন নদের তীরবর্তী এলাকাবাসীর মনে। শুধু কোলাঘাট নয়, উপকূলবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে।
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নদী ও সমুদ্র উপকূল মিলিয়ে মোট ৬৫.৫ কিলোমিটার উপকূলবর্তী অঞ্চল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় হলদি, রূপনারায়ণ, রসুলপুর, কেলেঘাই, বাগুই, কাঁসাই ও চন্ডিয়া সহ বেশ কয়েকটি ছোটো বড়ো নদ নদী জেলার শিরা-উপশিরা দিয়ে বয়ে গেছে। বিভিন্ন নদ-নদীর বাঁধে প্রায়শই ফাটল লক্ষ্য করা যায়। বর্ষাকালে নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। সম্প্রতি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে তমলুক ব্লকের কাঁসাই নদী তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ধ্বস নামে। অন্যদিকে, ১২ কোলাঘাটের দেনান অঞ্চলে ধ্বস নামে। দ্রুতই সেচ ও জলপথ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা পরিদর্শন করেন এলাকা। সম্প্রতি চলতি অর্থবছরেই সেচ ও জলপথ দফতর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন নদী বাঁধ সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা। নদী বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি নদী সংস্কারের কাজ হবে ওই টাকায়। কোনো কোনো নদীতে চলছে সেই কাজ।
নদী ভাঙনের মূল কারণ হিসেবে উঠে আসছে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ। নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে অবৈধ নির্মাণের কারণে নদীর অন্যদিক প্রবল ভাঙনের সম্মুখীন হয়। শেষ কয়েক বছরে কোলাঘাটের মানুষজন ভুক্তভোগী রূপনারায়ণনদের তীব্র ভাঙ্গনে। কোলাঘাটবাসীর অভিযোগ, রূপনারায়ণ নদের ওপর দিকে হাওড়া জেলায় তীরবর্তী অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠছে। কংক্রিট নির্মাণের জন্যই বোল্ডার ও লোহার বিম দিয়ে পরিবর্তন করা হচ্ছে রূপনারায়ণ নদের গতিপথ। আর এর ফলেই জোয়ার ও ভাটার সময় খরস্রোতে ভাঙছে কোলাঘাট ব্লকের কিছু জায়গা। নদী ভাঙ্গন রোধে কোলাঘাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে পথনাটক। পথনাটক 'ভাঙনের মুখোমুখি আমরা' অভিনীত হচ্ছে। অভিনয় করছে সৌম্যদীপ, সোমা, ও গোবিন্দ। কোলাঘাটের এই যুবক যুবতীদের মূল উদ্দেশ্য নদীর ভাঙন রোধে মানুষকে সচেতন করা। তাদের এই সচেতনতামূলক পথনাটক দাগ কেটেছে কোলাঘাট বাসিন্দাদের মনে।