অবলা প্রাণীদের দেখাশোনা করার মূল উদ্যোগ দশম শ্রেণীর পড়ুয়া নন্দিনীর।নিজের এই কাজ প্রসঙ্গে সে জানিয়েছে, ‘প্রথমত যখন করোনা শুরু হয় তখন থেকেই আমার বিড়ালটা ছিল। তারপর আস্তে আস্তে বিড়াল বাড়তে থাকে বর্তমানে কুকুরদের কেউ আমি খাবার খাওয়াই।’ মাত্র এইটুকু বয়সেই নন্দিনীর উপর এক বিরাট দায়িত্ব। প্রতিদিন নিয়ম করে তার বাড়িতে থাকা বেড়াল গুলোকে খাবার আর ওষুধ দেওয়ার দায়িত্ব তার ওপর। বর্তমানে তার বাড়ির বেড়ালের সংখ্যা ১৬। রাস্তার অবলা প্রাণীগুলির ওপর এক অদ্ভুত মায়া তার। অসুস্থ, অনাথ বেড়াল বাচ্চাদের পরম যত্নে নিজের বাড়ি নিয়ে আসে সে। এরপর সেবা শুশ্রুষা করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনে তাদের। তবে আর রাস্তায় নয়। নন্দিনীর উদ্ধার করে আনা বেড়াল গুলোর পাকাপাকি বাসস্থান হয় তার বাড়ি। প্রয়োজনে নিয়মিত ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যায় তাদের। নন্দিনীর বাবা পেশায় গৃহ শিক্ষক। কাটোয়া শহরের বিদ্যাসাগর পল্লী এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে নন্দিনী ও তার মা বাবা।
advertisement
আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের জন্য বিরাট নির্দেশ! সব ছুটি বাতিল, বড় চ্য়ালেঞ্জের মুখোমুখি উর্দিধারীরা
আরও পড়ুন: ভাঙড়ের পর মনোনয়ন ঘিরে রণক্ষেত্র ক্যানিং, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ব্যাপক বোমাবাজি, গুলিবিদ্ধ ২
নিজের মেয়ের এই পশুপ্রেম নিয়ে তার বাবা বলেন, আমার মেয়ে যে এই কাজ করছে আমার খুবই ভাল লাগছে । আমি ওকে শিখিয়ে দি নাই, ও নিজের ইচ্ছায় করছে , আমারও ভাল লাগছে। আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন সহযোগিতা করবো । বর্তমানে আমি টিউশন পড়াই, আর যা রোজগার হয় ওখান থেকেই সবটা চালাই। তবে সম্পূর্ণ নিজেদের চেষ্টাতেই এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এই পরিবারটি। এই পরিবারটির কথায় রাস্তার অবলা প্রাণীদের খাবার দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত সহ্য করতে হয় প্রতিবেশীদের নানান কটুক্তি ভেসে আসে মন্তব্য। তারা আরও জানিয়েছেন, প্রতিবেশীদের কটুক্তির জেরে আগে দুবেলা রাস্তার কুকুরদের ভাত খাওয়ালেও এখন মাঝরাতে বাবাকে সাথে নিয়ে রাস্তার কুকুরদের ভাত খাওয়াতে যায় নন্দিনী। এই প্রসঙ্গে নন্দিনী জানিয়েছে, এতগুলো অবলা প্রাণীর রান্নার জন্য নিজেদের স্বল্প আয় থেকেও আলাদা ওভেনের ব্যবস্থা করেছে এই পরিবারটি। প্রতিদিন নিয়ম করে ভাত মাংস কিংবা মাছ তারা তুলে দেয় অবলা প্রাণী গুলোর মুখে। রাস্তার কুকুরদের জন্য সামাজিক মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে দশম শ্রেণীর ছাত্রী নন্দিনী। সে জানিয়েছে সামাজিক মাধ্যম থেকেও অনেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের দিকে। আর এভাবেই অপার পশু প্রেমকে সাথে নিয়ে অবলা প্রাণীদের সেবা করে চলেছে কাটোয়ার এই পরিবার।
Bonoarilal Chowdhury