জেলায় এই প্রথম আনা হল এই সুপার সিডার মেশিন। আপাতত মঙ্গলকোট ও মন্তেশ্বরে দেওয়া হয়েছে এই মেশিন। মঙ্গলকোট ব্লকের জবগ্রামের সমবায় সমিতিকে ও মন্তেশ্বরের গোপাল নগর এলাকার ব্যক্তিগতভাবে একজনকে দেওয়া হয়েছে এই মেশিনের উপভোক্তা হিসেবে। সরকারের তরফে পূর্ব বর্ধমানে দেওয়া হল এই অত্যাধুনিক মেশিন। কম্বাইন্ড হারভেস্টার হারভেস্টিং করার পর যে সমস্ত খড়গুলি জমিতে থাকে সেগুলি পুড়িয়ে ফেলার প্রবণতা থাকে চাষিদের মধ্যে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে। মাটির উর্বরতা কমে যায়। সেই কথাকে মাথায় রেখেই দীর্ঘদিন ধরে জেলার কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা সন্ধান চালাচ্ছিলেন এই ধরনের মেশিনের। অবশেষে জেলায় আনা সম্ভব হয়েছে এই অত্যাধুনিক সুপার সিডার মেশিন।
advertisement
সুপার সিডারের কার্যকারিতা: মাটিতে যেকোনও জমে থাকা খড় বা ঘাসকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে, মাটিতে মিশিয়ে ফেলে। মাটি চোষে ফেলে। বীজ ও সার যদি নির্দিষ্ট গর্তে দেওয়া হয় তাহলে এই মেশিন ওই বীজ ও সার জমিতে বুনে দেয়। এই মেশিনের আরও একটি কাজ হল রোলার লেভেলার দিয়ে মাটি সমান করে দেয়।
আরও পড়ুন - কৃত্রিম হাত ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে রেনুকে
উপকারীতা: দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে পরিবেশ। একটি মেশিনেই কাজ হবে একাধিক। ফলে আর্থিক সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে সময়ও বাঁচবে চাষীদের।
সুপার সিডারের দাম: মেশিনের মূল্য প্রায় ২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী উপভোক্তারা এই মেশিন কিনতে ছাড় পেয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জেলার কোথায় কোথায় মিলছে এই সুপার সিডার
মেশিন: মঙ্গলকোট ব্লকের জবগ্রামে ও মন্তেশ্বরের ব্লকের শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপাল নগর মৌজায়। জবগ্রামের সমবায় সমিতি উপভোক্তা হিসেবে নিয়েছে এই মেশিন। অন্যদিকে গোপাল নগর মৌজার ব্যক্তিগতভাবে উপভোক্তা হিসেবে এই মেশিন নিয়েছেন কার্তিক চন্দ্র ঘোষ। এই সমস্ত দুই জায়গায় চাষীরা পেতে পারেন এই মেশিন।
কি রকম ট্রাক্টর প্রয়োজন এই সুপার সিডারের জন্য: ৬৩ Hc (হর্স পাওয়ার) এর ট্রাক্টর প্রয়োজন। এর থেকে কম Hc (হর্স পাওয়ার) এর ট্রাক্টরে এই মেশিন চলবে না। অর্থাৎ বড় ট্রাক্টর ছাড়া এই মেশিনটি চলবে না।
এ বিষয়ে কৃষি দফতরের আধিকারিক শুভেন্দু হাজরা বলেন, "বর্তমানে জেলায় দুটি জায়গায় এই মেশিন দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী এই মেশিনের জনপ্রিয়তা বাড়বে। লাভবান হবেন চাষীরা। "
আরও পড়ুন - নিজের পেশার পাশাপাশি দুঃস্থদের নৃত্য শেখাচ্ছেন এ.এস.আই কৃষ্ণা সাহা
মন্তেশ্বর ব্লকের উপভোক্তা কার্তিক চন্দ্র ঘোষ বলেন, "সাধারণত কোনও জমিতে বীজ ফেলে তার থেকে চারা তৈরি হলে সেগুলো চাষের জমিতে বপন করা হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে দুবার কাজ করতে হয়। তবে এই সুপার সিডার একসঙ্গে একেবারে চাষের জমিতে বীজ বপন করে দেয়, সঙ্গে প্রয়োজনীয় সার ও দিয়ে দেয় ফলে সময় ও শ্রম এমনকি খরচ ও কমেবে। " তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক ভাবে যে সমস্ত চাষীরা তাঁর কাছ থেকে এই মেশিন নেবেন তাঁদের মেশিনের জন্য কোনও ভাড়া দিতে হবে না।
আপাতত তিনি বিনামূল্যেই নিজের এলাকায় মন্তেশ্বরের ব্লকের শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপাল নগর মৌজায় ফ্রি-তেই দেবেন এই সুপার সিডার মেশিনটি। কার্তিক চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর (৯০৯৩৩৫৬৪৪০)
উল্লেখ্য, এই সুপারসিডার মেশিন নিয়ে ডেমোনস্ট্রেশন চলছে। সম্প্রতি একবার ডেমোনস্ট্রেশন হয়েছে। এরপর আগামী সপ্তাহের সোমবার ডেমোস্ট্রেশন হবে।
Malobika Biswas