কালের নিয়মে ধীরে ধীরে সেই তাঁত শিল্প এখন প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। কদর কমেছে তাঁতে বোনা কাপড়ের। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে আজ ধ্বংসের মুখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রাচীন এই কুটিরশিল্প। একটা সময়ে গঙ্গারামপুর এর তাঁতের শাড়ি নদিয়া, শান্তিপুরের মতই প্রসিদ্ধ ছিল রাজ্যজুড়ে। বাংলাদেশের শাড়ির পাশাপাশি আধুনিক ডিজাইনের বিভিন্ন শাড়ি বাজারে চলে আসাতে কদর কমেছে হাতে বানানো তাঁতের শাড়ির।
advertisement
একটা সময় গঙ্গারামপুর এলাকাজুড়ে প্রায় পাঁচ হাজারের উপর পরিবার এই তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা তিনশো হবে কিনা তা সন্দেহ প্রকাশ করেছে এলাকার তাঁত শিল্পীরা। তাঁত বুনে আর অন্ন জুটছে না গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের। তাই সংসারের হাল ধরতে, পেটের টানে অনেকেই পেশা বদলে ফেলেছেন। কেউ দিনমজুর তো কেউ ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছেন শ্রমিকের কাজ করতে।
এলাকার তাঁত শিল্পীদের অভিযোগ,রাজ্য সরকার বর্তমানে বহু সংস্থাকে টিকিয়ে রাখার জন্য আর্থিক সাহায্য করছে। কিন্তু তাঁত শিল্পীদের জন্য কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না কিংবা সরকারি সাহায্য করা হচ্ছে না বললেই চলে। মৃতপ্রায় এই তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে বর্তমান রাজ্য সরকার বিশেষত গঙ্গারামপুর এলাকার তাঁত শিল্পীদের সুবিধার্থে তন্তুজর পক্ষ থেকে একটি অফিস নির্মাণ করে।
আরও পড়ুনঃ GK: বলুন তো দেখি, Helmet-এর বাংলা কী? উত্তর দিতে ব্যর্থ ৯৯ শতাংশ
যেখান থেকে সুলভ মূল্যে স্থানীয় তাঁতিদের সুতো সরবরাহের লক্ষ্য নেওয়া হয়। উৎপাদিত কাপড়ের বিক্রির জন্য তন্তুজর এই কাউন্টারকেই ব্যবহার করা হবে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে কাউন্টার তৈরির পরে দীর্ঘ সময় পেরিয়েছে। কিন্তু যে লক্ষ্যে এই কাউন্টার তৈরি করা হয়েছিল তা পূর্ণ হয়নি। কোনরকম হাল ফেরেনি স্থানীয় তাঁত শিল্পীদের। আদৌ এই সমস্যার কবে সমাধান হবে তার দিকে তাকিয়ে তাঁত শিল্পীরা।
সুস্মিতা গোস্বামী