TRENDING:

Siliguri News: নিউইয়র্কে 'বিনা পয়সার বাজার' বসান শিলিগুড়ির কল্যাণ

Last Updated:

Siliguri News: কল্যাণ দেবনাথের মানবিকতার আরেকটি বড় উদাহরণ তাঁর ‘বিনা পয়সার বাজার’। নিউইয়র্কে ছুটির দিন মানেই তাঁর অন্যরকম ব্যস্ততা। বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে সাজিয়ে দেন কিছু বোতল জল, পুরনো জামাকাপড়, বই, নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী—যাদের প্রয়োজন তাঁরা নীরবে নিয়ে যায়। সাইনবোর্ডে লেখা থাকে—'বিনা পয়সার বাজার'

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
শিলিগুড়ি, ঋত্বিক ভট্টাচার্য : শিলিগুড়ির বাগডোগরা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা কল্যাণ দেবনাথ। শহরে বড় হওয়া এক শান্ত যুবক। তবে আজ তাঁর পরিচিতি ছাড়িয়ে গিয়েছে দেশের সীমানা। গত ৬-৮ বছর ধরে তিনি থাকেন নিউইয়র্কে, সেখানকার এয়ারপোর্টে কর্মরত। ব্যস্ত শহরের দৌড়ঝাঁপের মধ্যেও তাঁর ভিতরে আজও ধুকধুক করে নিজের শহর, নিজের দেশ-মাটি। সেই মাটির টান থেকেই কল্যাণ দেবনাথ গড়ে তুলেছেন এক অন্যরকম মানবিক পরিচয়।
advertisement

নিউইয়র্কের রাস্তায় মাঝেমধ্যেই দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য। সামনে লাগানো কারও ছবি, হাতে ফোন, পাশে ছোট্ট সাউন্ড বক্সে বাজছে কোনও পুরনো বাংলা গান, আর দাঁড়িয়ে আছেন একজন মানুষ—তিনি কল্যাণ দেবনাথ। নিজের জন্মদিনে কেক কেটে আনন্দ করেন অনেকে, কিন্তু কল্যাণের কাছে জন্মদিন মানে অন্য কারও জন্মদিন উদযাপন। তিনি উদযাপন করেন দেশের মহান শিল্পী, মনীষী, বীরযোদ্ধাদের জন্মদিন। শুধু তাই নয়, শিলিগুড়ির এমন অনেক মানুষ যাঁরা শুধু স্থানীয় মহলে পরিচিত, তাঁদের জন্মদিনও নিউইয়র্কের মাটিতে পালন করেন তিনি। নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ফ্রন্ট ক্যামেরা অন করে তাঁদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বার্তা রেকর্ড করেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, আর সেই ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।

advertisement

কল্যাণ দেবনাথের মানবিকতার আরেকটি বড় উদাহরণ তাঁর ‘বিনা পয়সার বাজার’। নিউইয়র্কে ছুটির দিন মানেই তাঁর অন্যরকম ব্যস্ততা। বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে সাজিয়ে দেন কিছু বোতল জল, পুরনো জামাকাপড়, বই, নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী—যাদের প্রয়োজন তাঁরা নীরবে নিয়ে যায়। সাইনবোর্ডে লেখা থাকে—’বিনা পয়সার বাজার’। ইংরেজি ও বাংলা দু’ভাষাতেই বার্তা লেখা। তিনি জানালেন, ওখানকার মানুষ খুবই সঙ্ঘবদ্ধ। যার যা দরকার, শুধু সে-ই নিয়ে যায়, ফলে কোনও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকে না। সকাল দশটা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮-৯টা পর্যন্ত চলে তাঁর এই ছোট্ট বাজার। এইসব সামগ্রী তিনি কেনেন নিজের উপার্জনের টাকায়।

advertisement

এইসব কাজ করতে গিয়ে বহুবার তিনি দেখেছেন—ভারতীয় নাগরিকরা তাঁর এই উদ্যোগ দেখে থমকে দাঁড়িয়েছেন। কেউ গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে এসে বলেছে, ” আপনার এই কাজ দেখে নিজের দেশের কথা মনে পড়ে গেল”, তখনই কল্যাণের মন ভিজে যায়। দেশের মানুষের সঙ্গে সেই স্বল্পক্ষণ কথোপকথন তাঁর মনে আলাদা শক্তি যোগায়। তিনি বলেন, ”বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের জন্মদিন পালন করলে মনে হয় ভাল কিছু করার উৎসাহ বাড়ে।”

advertisement

View More

শুধু মানবিক কাজ নয়, কল্যাণ দেবনাথের আরেক দিক তাঁর সৃজনশীলতা। খালি সময়ে তিনি শর্ট ফিল্ম বানান, বই লেখেন, দোভাষী হিসেবেও কাজ করেন। তাঁর তৈরি বেশ কিছু শর্ট ফিল্ম সম্মানও পেয়েছে—জলপাইগুড়ির JPDA শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দ্বিতীয় সেরা গল্প, মুম্বইয়ের জাতীয় পর্যায়ের উৎসবে বিশেষ সম্মান, কলকাতা ও সোদপুরের শর্ট ফিল্ম উৎসবে অফিসিয়াল সিলেকশন—এসবই তাঁর কাজের প্রমাণ।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
সোশ্যাল মিডিয়া বদলে দিল জীবন! সাধারণ গৃহবধূ থেকে সফল ব্যবসায়ী
আরও দেখুন

সম্প্রতি নিজের শহরে ফিরেছেন তিনি, বাগডোগরার বাড়িতে কয়েকদিনের ছুটি কাটাতে। সেই সুযোগে ‘লোকাল 18 বাংলা’-র সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন—”ছোটবেলা থেকেই দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছি। বাইরে গিয়ে কাজের ব্যস্ততা থাকলেও যেদিন ছুটি পাই, সেদিনই চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়াতে।” বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়েও নিজের শহরকে ভোলেননি তিনি। এটাই কল্যাণ দেবনাথের আলাদা পরিচয়— নিউইয়র্কে থেকেও তিনি বাঁচেন শিলিগুড়ির হৃদয়ে, আর শিলিগুড়ির মানুষের মধ্যেই বাঁচে তাঁর দেশপ্রেম।

বাংলা খবর/ খবর/উত্তরবঙ্গ/
Siliguri News: নিউইয়র্কে 'বিনা পয়সার বাজার' বসান শিলিগুড়ির কল্যাণ
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল