শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ডাবগ্রাম ২ নম্বর অঞ্চলের আশিঘর তেলিপাড়ায় গত ২৫ বছর ধরে হোয়াইট সিমেন্ট দিয়ে যিশুখ্রিস্ট সহ নানা ধর্মীয় মূর্তি তৈরি করে আসছেন সীতারাম ভগৎ ও তাঁর পরিবার। এক সময় বড়দিন এলেই এই এলাকায় ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। চার্চের জন্য যিশুখ্রিস্টের জন্মদৃশ্যের পুতুল তৈরি করতে দিন-রাত এক করে কাজ চলত।
advertisement
সীতারাম ভগৎ জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বদলে গিয়েছে। আগে এই হোয়াইট সিমেন্টের মূর্তির ব্যাপক চাহিদা ছিল। প্রায় ২০-২৫ জন কর্মচারী একসঙ্গে কাজ করতেন। শিলিগুড়ি শহর তো বটেই, শহরের বাইরেও এই পুতুলের অর্ডার যেত। কিন্তু এখন বাজার দখল করেছে চায়না-তৈরি পুতুল ও সাজসজ্জার সামগ্রী। ফলে দেশি হাতে তৈরি যিশু-মূর্তির চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে।
এদিকে চাহিদা কমতেই একে একে কাজ ছেড়েছেন কর্মচারীরা। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি পুরনো দোকান থেকে অর্ডার আসে বলেই কোনওরকমে এই কাজ ধরে রেখেছে সীতারাম ভগৎ-এর পরিবার। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের অন্য পেশায় যুক্ত হতে হয়েছে। এখন আর আগের মতো নিয়মিত পুতুল তৈরি হয় না। ২৫ ডিসেম্বরের আগে অর্ডার এলে তবেই যিশুখ্রিস্টের মূর্তি বানানো হয় আর দীপাবলির আগে অর্ডার পেলে তৈরি হয় লক্ষ্মী-গণেশ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বড়দিনের উৎসবে যখন আলোয় ভরে উঠছে চার্চ ও শহর, তখন ডাবগ্রামের এই শিল্পপল্লিতে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার ছায়া। এক সময় যে শিল্পে সংসার চলত, আজ সেই শিল্প টিকে আছে শুধুই স্মৃতির ভরসায়। আধুনিকতার ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে এক প্রজন্মের হাতে গড়া যিশু-মূর্তি শিল্প, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শ্রম, বিশ্বাস আর বহু বছরের জীবন সংগ্রাম।





