রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে মৌ পালন করে বহু লোক স্বনির্ভর হচ্ছেন। পাহাড়ের ওই ছোট্ট গ্রামে মৌমাছি চাষ করে গ্রামবাসীদের আয়ের পথ দেখাচ্ছেন রতন রানা। পাঁচ বছর আগে সরকারি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন রতন। তার পর নিজের বাড়িতে মৌমাছির পাঁচটা ঘর দিয়ে শুরু। এখন তাঁর বাড়িতে প্রায় কুড়িটি মৌমাছির ঘর রয়েছে এবং সেখান থেকে বছরভর মধু সংগ্রহ করেন তিনি।
advertisement
জানেন কি এ রাজ্যেই সাত থেকে আট ধরনের মধু পাওয়া যায়, যার রঙ ও স্বাদ আলাদা। মধু সাধারণত কালচে লাল রঙের হয় বলেই সকলের ধারণা৷ তবে যে এলাকায় যেমন ফুল, সেখানে থেকে তেমন মধু সংগ্রহ করবে মৌমাছি৷ তাই সেই মধুর রঙ ও স্বাদ হবে সম্পূর্ণ আলাদা।
আরও পড়ুন- ঢোকা যাবে সোজা খাঁচায়, এই শীতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় বিরাট চমক
বিভিন্ন সিজনের ফুল বিভিন্ন রকম হয়, তাই বিভিন্ন সিজনে কালচে থেকে শুরু করে হালকা সোনালী রঙের মধু হয় বলে দাবি রতনের। মৌ পালন করে এই মধু সংগ্রহ করতে হয়৷ বাজারের বহু নামী দামি কোম্পানি মধু পাওয়া যায়, যার বেশিরভাগটাই ভেজাল বলে দাবি রতনের৷ আসল মধু হলে সেই মধু কিছুদিন থাকার পর জমাট বাঁধতে থাকবে। পাশাপাশি মধুর স্বাদ অনুভব করলেও অনেকটা বোঝা যাবে।
রতনের বাড়িতে গেলেই দেখা যাবে পাহাড়ি বাগানে সারি সারি বক্স, আর তাতে বেশ কয়েকটি ফ্রেমে লাখ লাখ মৌমাছি৷ আছে একটি দরজাও, যেখান থেকে সূর্য উঠলেই শ্রমিক মৌমাছি বেরিয়ে পড়ে ফুলের থেকে মধু সংগ্রহ করতে৷ প্রতিটা বক্সে একটি রানি মৌমাছি আর কয়েকটা পুরুষ মৌমাছি থাকে৷ বাদ বাকি সব শ্রমিক মৌমাছি।
আরও পড়ুন- কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন এই শিবমন্দির গ্রামীণ ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল
নিজের মতো বক্সের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায় তারা৷ আবার সূর্য ডোবার আগে প্রত্যেকে ফিরে আসে নিজের বাসস্থানে অর্থাৎ বক্সে। রতন বলেন, “সরকারি কোর্স করে পাঁচ বছর আগে আমি মৌমাছি প্রতিপালন শিখেছিলাম। এখন বাড়িতেই মৌমাছি পালন করে সেখান থেকে মধু সংগ্রহ করি এবং সেটা বিক্রিও হয়। ১২০০ টাকা প্রতি কেজি হিসেবে আমি মধু বিক্রি করে থাকি।” রতনকে দেখে গ্রামের আরও স্থানীয়রাও মৌ পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
অনির্বাণ রায়