মর্মান্তিক রেল দূর্ঘটনায় ভাইয়ের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সেই অবস্থায় দেহ চিহ্নিত করতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। তবে ট্রেন দূর্ঘটনার চারদিন পর অবশেষে দেহ খুঁজে পেল পরিবারের লোকেরা।
দূর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের যুবক কৃষ্ণ রবিদাস। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান পরিবারের লোকেরা। সরকারি হেল্প লাইনে যোগাযোগ করেও কোনও খোঁজ মেলেনি।
advertisement
আরও পড়ুন- বিমানবন্দরে ২ লক্ষ টাকা চুরি করে হাতেনাতে ধৃত ৩ !
অবশেষে ঘটনার চারদিন পর মৃতের দাদা অশোক রবিদাস উড়িষ্যার ভূবনেশ্বরে হাসপাতালের মর্গে দেহ চিহ্নিত করেন। দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চিনতে সমস্যা হয়। তবে দাদা অশোক রবিদাস ভাইয়ের জামা, প্যান্ট ও বেল্ট দেখে দেহ চিহ্নিত করেন।
পরে পকেটে থাকা আধার কার্ড দেখে দেহ শনাক্ত হয়। খবর পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকেরা। বাবা হেমন্ত রবিদাস বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার পর আমার ছোট ছেলে নিখোঁজ ছিল। আমার বড় ছেলে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তিন দিন ধরে ছেলের কোনও খোঁজ পাইনি। অবশেষে ভুবনেশ্বরে মর্গে জামা প্যান্ট বেল্ট দেখে দেহ চিহ্নিত করে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাইয়ে পাইপ লাইনের কাজে গিয়েছিল কৃষ্ণ রবিদাস। বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। আগামী ১২ জুন বোনের বিয়ে রয়েছে। তাই প্রায় পাঁচ মাস পর বাড়ি ফিরছিলেন কৃষ্ণ।
হমসফর এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন। শুক্রবার ঘটে যাওয়া বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কৃষ্ণ রবিদাসের (২৩)। কৃষ্ণ রবিদাসের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মালিওর-১ নম্বর পঞ্চায়েতের পিপুলতলা গ্রামে।
কৃষ্ণরা চার ভাই দুই বোন। কৃষ্ণ ছিল বাড়ির ছোট ছেলে। বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা হেমন্ত রবিদাস ও মা যশোদা রবিদাস। ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন মা যশোদা রবিদাস। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার পরিজনরা।
আরও পড়ুন- ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী! মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে ফিরলেন একই পরিবারের সাত সদস্য
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি চেন্নাই থেকে হাওড়া ফিরছিলেন। ট্রেনে ওঠার আগে বাড়িতে ফোন করেছিল কৃষ্ণ। সেই শেষ কথা। তারপর আর বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা হয়নি।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে কৃষ্ণের দেহ গ্রামের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।গ্রামের ছেলের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়ে।
হরষিত সিংহ