দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এই লাইব্রেরি ছিল নিস্তব্ধ, পাঠকহীন। ছিল না কোন লাইব্রেরিয়ানও। অবশেষে একজন লাইব্রেরিয়ান পেল জলপাইগুড়ি সদর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির এই লাইব্রেরিটি। আর সেই লাইব্রেরিতে প্রাণ ফেরানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন নতুন লাইব্রেরিয়ান শবনম মুস্তাফি। কাজে যোগদানের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই লাইব্রেরির পাঠক সংখ্যা দ্বিগুণ করেছেন তিনি। পাঠক সংখ্যা ১০০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০।
advertisement
আরও পড়ুনঃ হু হু করে তাপমাত্রার পারদ নামল পাহাড়ে! ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান, দেখে নিন আবহাওয়ার মেগা আপডেট
এই বাড়তি পাঠক সংখ্যার পিছনে কোনও বিজ্ঞাপন নয়, কোনও প্রচার নয়, বরং শবনমের আন্তরিকতা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগই মূল হাতিয়ার। নিজের স্মার্টফোন হাতে নিয়েই একের পর এক চেনা-পরিচিতকে ফোন করে আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, “আসুন বই পড়ুন, লাইব্রেরি আবার বাঁচুক।” পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে সাধারণ মানুষের গোচরে আসার জন্য চালু করেছেন ডিস্ট্রিক্ট পোর্টাল। যেখানে সমস্ত বইয়ের আপডেট পেয়ে যান গ্রাহকেরা।
আরও পড়ুনঃ ঝিরিঝিরি বৃষ্টির বিকেলে জলপাইগুড়ির জঙ্গলে ভয়ানক দৃশ্য…! পালানোর পথ নেই, কী হল শেষমেশ?
এই বিষয়ে শবনম বলেন, “প্রায় এক দশক পর এই লাইব্রেরিতে আমি একজন লাইব্রেরিয়ান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। এখানে যখন যোগ দিই, পাঠক বলতে হাতে গোনা কয়েকজন। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, বসে থাকলে চলবে না। ফোন করে, কথা বলে মানুষকে বোঝাতে শুরু করি বই পড়ার গুরুত্ব।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বর্তমানে বিডিও অফিসের ভিতরে অবস্থিত এই লাইব্রেরিতে রয়েছে সাহিত্য, ইতিহাস, রাজনীতি, বিজ্ঞান-সহ নানা বিষয়ের বই। শবনমের কথায়, “নতুন পাঠকদের আগমনে বই পড়ার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী আরও বই আনার উদ্যোগও চলছে।”
একেবারে জমে উঠছে পাঠক-লাইব্রেরিয়ানের সম্পর্ক। কেউ বলছেন, “শবনমদির ফোন না পেলে লাইব্রেরির কথাই মনে পড়ত না।” কেউ আবার বলছেন, “ওনার আন্তরিকতা দেখে লাইব্রেরিতে আসার ইচ্ছে জাগছে।” এ যেন এক নিঃশব্দ বিপ্লব, যেখানে বইয়ের গন্ধে ভরে উঠছে লাইব্রেরির প্রতিটি কোণা, আর পাঠকেরা খুঁজে পাচ্ছেন এক টুকরো আশ্রয়।