জলপাইগুড়ির মার্চেন্ট রোডের ফুটপাথে প্রতিদিন সকালে বসে পড়েন মিঠু দাস। একসময় মুচির পেশা ছিল গর্বের জুতো সেলাই থেকে শুরু করে নতুন জুতো বানানো, সবই করতেন দক্ষ হাতে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনার পর বাবার পথ ধরেই এই পেশা বেছে নিয়েছিলেন মিঠুবাবু। সরকারি চাকরির হাতছানিকে উপেক্ষা করে সোজা নামেন বাবার পেশায়, কারণ একসময় এই পেশা দিয়েই ভাল চলত সংসার।
advertisement
কিন্তু সময় বদলেছে। এখন কেউ আর পুরোনো জুতো সারাতে আসেন না, বরং ৩০-৪০ টাকায় নতুন জুতো কিনে নিচ্ছেন দোকান থেকে। যেখানে মিঠু দাস এক জোড়া হাতে বানানো জুতোর দাম চেয়েছেন ৩০০ টাকা, সেখানে ক্রেতারা আধুনিকতার ঝোঁকে ঘুরেও তাকান না। “আগে দিনে ৫০০ টাকা রোজগার হত, এখন সেটা কখনও ২০০, কখনও ২৫০, আবার কোন দিন কিছুই হয় না।” কথায় ঝরে পড়ে অসহায়তা। সেলাই মেশিনের খচখচ শব্দের মধ্যেও শোনা যায় হতাশার সুর। হঠাৎ কারো এক জোড়া ছেঁড়া জুতোই যেন এখন তার জীবনের একমাত্র ভরসা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
আধুনিকতার ছোঁয়া যে কেবল প্রযুক্তিকে বদলাচ্ছে না, বদলে দিচ্ছে হাজারো মিঠু দাসের ভবিষ্যৎও। যন্ত্র আর সস্তা পণ্যের যুগে মানুষ ভুলে যাচ্ছে সেই হাতে তৈরি পরিশ্রমের গন্ধ। আর তাতেই হারিয়ে যাচ্ছে একেকটি পেশার অস্তিত্ব, হারিয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট জীবনের লড়াই। আজ মিঠু দাস শুধুই জুতো সেলাই করেন না—তিনি আসলে এক লড়াকু সৈনিক, যিনি এখনও চেষ্টা করছেন নিজের জীবনের সেলাই ধরে রাখতে!
সুরজিৎ দে